খুলনায় সবজির বাজারে স্বস্তি, দাম কমেনি মাছের
খুলনার বাজারগুলোতে শীতের আগাম সবজির আমদানিতে কিছুটা কমেছে বর্ষাকালীন সবজির দাম। এতে ক্রেতারা নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী কিনতে পারছেন সবজি। তবে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ায় বেড়েছে বিভিন্ন প্রকার মাছের দাম। আমদানি বাড়লেও দাম কমাতে চাইছেন না কোনো বিক্রেতা। মাছ উৎপাদনকারীরা দাম না কমানোয় পাইকারি আর খুচরা বিক্রেতারাও পারছেন না ক্রেতার চাহিদা পূরণ করতে।
খুলনার নিউ মার্কেট কাঁচা বাজার, বয়রা পূজাখোলা বাজার, ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজার, নিরালা বাজার, টুটপাড়া জোড়াকল বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের সবজি বিক্রেতা রবিউল, রানা, মিরাজ মেম্বররা বলেন, বর্ষার প্রায় শেষ। এখনও বাজারে বর্ষাকালের সবজির আমদানি বেশ। একই সঙ্গে শীতকালের সবজির আগাম চালানও বাজারে আসতে শুরু করেছে। ফলে বাজারে সবজিতে স্বস্তি ফিরেছে। ক্রেতারা এখন আর আগের মত এক কেজির জায়গায় ৭৫০ গ্রাম সবজি কিনে দিন পার করছেন না। যার যা চাহিদা সেই অনুপাতেই তারা কিনতে পারছেন।
আরও পড়ুন: কাঁচা মরিচের ঝাল কমেছে, চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে শীতের সবজি
নিউ মার্কেট সবজি বাজারে সবজি বিক্রেতা মোজাম বেপারী বলেন, বাজারে এখনও বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে বেগুন। এখন বাজারে যে বেগুন আছে তা গাছের শেষ বেগুন। তবুও এই সবজিটির দাম খুব একটা কমেনি। বর্তমানে বাজারে বেগুনের কেজি ৫০ টাকার বেশি।
তিনি আরও বলেন, এখন বাজারে পেঁপে বিক্রি হয়েছে ২০ টাকায়, যা গত সপ্তাহেও ২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া মিষ্টি কুমড়া ১০ টাকা কমে ৩০ টাকায়, বরবটি ৪০ টাকা, পটল ১০ টাকা কমে ৩০ টাকা, কুচ ৫০ টাকা, কুশি ১০ টাকা কমে ৩০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, উচ্ছে ৬০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাগজি লেবু হালি ৩০ টাকা এবং যে কোনো প্রকার শাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজারের সবজি বিক্রেতা পলাশ বলেন, বাজারে বর্ষা আর শীতের সবজি এক সঙ্গেই আসছে। বর্ষার সবজির আমদানি কম হলেও ক্রেতারা কম দামেই তা কিনতে পারছেন।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে সরবরাহ কমের অজুহাত, বেড়েছে সবজির দাম
এই বাজারে সবজি কিনতে আসা সরকারী চাকরিজীবী মোশাররফ হোসেন বলেন, অফিস শেষে প্রতিদিন এখান থেকেই সবজিসহ অন্যান্য সামগ্রী কিনে একবারে বাসায় যাই। তবে গত ৩/৪ দিন ধরে দেখছি বর্ষার সবজির দাম অনেক কমে গেছে। বাজারে শীতের সবজি আসছে। দাম বেশি হলেও অনেকেই কিনছেন। আমার পক্ষে এখনও তা কেনা সম্ভব হয়নি।
এই বাজারের মাছ বিক্রেতা গোলাম রব্বানী বলেন, ইলিশ মাছ বাজারে আসার পর থেকে অন্যান্য মাছের দাম কিছু কমেছিল। মা ইলিশ রক্ষায় আবারও ২২ দিনের জন্য সাগর, নদ নদীতে জাল ফেলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় বাজারে মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এই অঞ্চলের মাছ আগের তুলনায় অনেক বেশি চলে যাচ্ছে রাজধানীতে। এতে খুলনার মানুষের মাছ খাওয়া আরও কমে যাবে।
আরও পড়ুন: বেড়েছে আলু-ডিমের দাম, অপরিবর্তিত চাল-ডাল-পেঁয়াজ
তিনি আরও বলেন, বাজারে তেলাপিয়া ১৫০ টাকা, রুই ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, কাতলা, মৃগেল ২২০ টাকা, ভেটকি মাছ ৫০০-৭০০ টাকা, রূপচাঁদা ৬০০-৯০০ টাকা, টেংরা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা মাছ ৩০০ টাকা, পাঙাশ মাছ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া যে কোনো ধরনের চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
আলমগীর হান্নান/জেএস/এএসএম