কোচিংয়ের বিরোধিতা করায় স্কুলশিক্ষিকা বরখাস্ত

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী
প্রকাশিত: ০৬:২৬ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২৩

নোয়াখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে অবৈধ কোচিং বাণিজ্যের বিরোধিতা করায় তাছলিমা বেগম নামের এক সহকারী শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) ওই শিক্ষিকা বিদ্যালয়ে গেলেও তাকে কোনো ক্লাস না নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এরআগে বুধবার (১১ অক্টোবর) প্রধান শিক্ষক মাহমুদ রিয়াদ সই করা চিঠিতে সাময়িক বরখাস্তের এ আদেশ দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং সহকারী প্রধানের সঙ্গে উচ্চস্বরে তর্ক করা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে গ্রুপিং করা, চার বছরের সন্তানকে সঙ্গে করে বিদ্যালয়ে আনা, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিডিয়াসহ বাইরের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা এবং শ্রেণিশিক্ষক হিসেবে আর্থিক অনিয়ম অভিযোগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

jagonews24

তবে খবর নিয়ে জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও প্রধান শিক্ষক অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির ৫০০ শিক্ষার্থীকে কোচিংয়ে বাধ্য করে আসছেন। এজন্য মাসে অতিরিক্ত ৫০০ টাকা করে গড়ে সবার থেকে আদায় করছেন। কেউ টাকা দিতে না চাইলে শ্রেণিকক্ষের হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত দেখানোসহ পরীক্ষা হলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

কোচিং করানোর জন্য প্রত্যেক শিক্ষককে সকাল ৮টায় বিদ্যালয়ে উপস্থিত এবং বিকেল ৫টার পর বাড়ি যেতে হয়। এমনকি শুক্রবারসহ ছুটির দিনেও সবাইকে বিদ্যালয়ে হাজির থাকতে বাধ্য করেন প্রধান শিক্ষক। তার এ নিয়মের বিরোধিতা করেন শিক্ষক তাছলিমা বেগম। এতে তার ওপর ক্ষিপ্ত হন প্রধান শিক্ষক।

প্রধান শিক্ষক ক্ষুব্ধ হওয়ার কথোপকথনের একটি অডিও জাগো নিউজের হাতে এসেছে। এতে বিদ্যালয়ে এভাবে কোচিংয়ের সরকারি কোনো নিয়ম নেই বলায় শিক্ষক তাছলিমা বেগমের ওপর ক্ষুব্ধ হতে শোনা যায় প্রধান শিক্ষক মাহমুদ রিয়াদকে। প্রধান শিক্ষককে বলতে শোনা যায়, ‘আমার নির্দেশমতো না চললে এ বিদ্যালয়ে চাকরি করা সম্ভব নয়’।

কথোপকথনের সত্যতা নিশ্চিত করে সহকারী শিক্ষিকা তাছলিমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।’ এর বেশি কোনো কথা বলতে তিনি রাজি হননি।

Noa-(4).jpg

জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মাহমুদ রিয়াদ সাময়িক বরখাস্তের কথা স্বীকার করে জাগো নিউজকে বলেন, ‘কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’

কোচিংয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কোচিং করানো হয়। তিনি দাবি করেন, নীতিমালা মেনেই বিদ্যালয়ে কোচিং চালানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) অজিত দেব জাগো নিউজকে বলেন, সরকার গেজেট করে বিদ্যালয়ে কোচিং বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। এ বিদ্যালয়ের বিষয়টি আমাদের জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইকবাল হোসেন মজনু/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।