ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা, তীরে ফিরেছেন জেলেরা
মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে ইলিশ শিকারের ওপর ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা। ইতোমধ্যে জাল, নৌকা, ট্রলারসহ ইলিশ শিকারের সব সরঞ্জাম নদীতে থেকে উঠিয়ে নিয়েছে জেলেরা। তবে নিষেধাজ্ঞার সময় কোনো অসাধু জেলে যাতে নদীতে মা ইলিশ শিকার করতে না পারেন সেজন্য কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সকালে ভোলা সদর উপজেলার মেঘনা নদীর তীরে সরেজমিনে দেখা গেছে, ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়ে ইতোমধ্যে নৌকা, ট্রলারসহ মাছ শিকারের সব উপকরণ নিয়ে তীরে ফিরে এসেছেন জেলেরা। নদীর তীরে বসে কেউ দলবল নিয়ে বসেছেন জাল বুনার কাজে, কেউ ট্রলার মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি গ্রামের জেলে মো. আবু কালাম মাঝি জানান, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে বুধবার সন্ধ্যায় ট্রলার, জাল ও ইলিশ শিকারের সব উপকরণ নিয়ে তীরে ফিরে এসেছেন। এছাড়াও আজ সকালে তারা ট্রলার থেকে জাল বস্তাভর্তি করে এবং ট্রলারের মেশিন নিয়ে বাড়ি নিয়ে গেছেন।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরায় ২৬ জেলেকে জরিমানা
তারা আরও বলেন, আমরা চাই ২২ দিনের অভিযানে কোনো অসাধু জেলে যাতে নদীতে গিয়ে মা ইলিশ শিকার করতে না পারে সেজন্য আমরা সরকারি ও প্রশাসনের কাছে কঠোর অভিযান পরিচালনার দাবি জানাচ্ছি।
শিবপুর ইউনিয়নের লাভলু মাঝি বলেন, এ বছর ইলিশের ভরা মৌসুম ও নিষেধাজ্ঞার আগেও তারা মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাননি। এখানে নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন তাদের কিছুটা কষ্টে যাবে। তবে সরকারিভাবে তাদের জন্য ভিজিএফের চাল দ্রুত বিতরণ করলে তাদের কষ্ট কম হবে।
এছাড়াও ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার সময় তারা বেকার সময় পার করবেন তাই বিভিন্ন এনজিওর ও ব্যাংক জেলেদের কিস্তি আদায় বন্ধ রাখার দাবিও জানান তারা।
ভোলার ইলিশার নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আখতার হোসেন জানান, নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন ভোলায় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময়ে যাতে কেউ করতে না পারে সেজন্য কঠোর অভিযান পরিচালনা করবো।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম হওয়ায় ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ভোলার মেঘনা, তেঁতুলিয়া নদী ও সাগর মোহনায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
তিনি আরও জানান, ভোলার সাত উপজেলা সরকারিভাবে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা রয়েছে এক লাখ ৬৫ হাজার। এদের মধ্যে এ বছর সরকারিভাবে ভিজিএফের চাল পাবে এক লাখ ৩৩ হাজার ৮৯৯ জন জেলে। ইতোমধ্যে চাল বিতরণ শুরু হয়েছে। এছাড়াও এনজিওর কিস্তি আদায় বন্ধের বিষয়ে এখন সিদ্ধান্ত হয়নি তবে সেটার হয়ে যাবে।
জুয়েল সাহা বিকাশ/আরএইচ/এএসএম