কারাগারে চোখ তুলে নেওয়ার চেষ্টা
নোয়াখালীতে কারাগারের সামনে বাদলের পরিবারের অনশন
নোয়াখালী জেলা কারাগারে কলম দিয়ে খুঁচিয়ে দশ বছরের সাজাপ্রাপ্ত নূর হোসেন বাদলের (৩২) দুই চোখ তুলে নেওয়ার চেষ্টাকারীর শাস্তি দাবিতে অনশন করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার। এ সময় বাদলের সুচিকিৎসার দাবিও জানানো হয়।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে জেলা কারাগারের সামনে আহত বাদলের মা রেহানা আক্তারের নেতৃত্বে পরিবারের লোকজন এ অনশন কর্মসূচি পালন করেন।
রেহানা আক্তার বলেন, আমার একমাত্র ছেলে বাদল। তার চোখ শেষ হয়ে গেছে। আমরা কার কাছে তার চোখ ভিক্ষা চাইবো? আমি সুচিকিৎসার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া আমার ছেলের চোখ নষ্টকারী সন্ত্রাসী মাইন উদ্দিনের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আমি হতভাগা মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বাদলের বোন বৃষ্টি আক্তার বলেন, আমার ভাই অপরাধী এবং সে সাজা ভোগ করছে। কিন্তু তার জীবন এভাবে হুমকির মধ্যে ফেলার জন্য মাইন উদ্দিনের বিচার চাই। কারাগার হলো নিরাপদ জায়গা, সেখানে যদি এমন নৃশংস ঘটনা ঘটে তাহলে আর কোথায় নিরাপত্তা পাবো।
বাদলের মামা নূর মোহাম্মদ বাবু বলেন, আমার ভাগনেকে মাইন উদ্দিন পূর্বশত্রুতার জের ধরে হামলা চালিয়েছে। মাইন উদ্দিনের ভাই কিরণ আমাদেরকে বাইরে থেকে হুমকি দিচ্ছেন। আমাদের কারো নিরাপত্তা নেই। মাইন উদ্দিন বেগমগঞ্জের চিহ্নিত মাদক কারবারি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার এবং বাদলের পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার সৈয়দ মো. জাবেদ হোসেন বলেন, কারাগারের সামনে বাদলের মাসহ পরিবারের লোকজনের অবস্থানের বিষয়টি জেনেছি। লিখিতভাবে কোনো অভিযোগ পেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমরা সুচিকিৎসার জন্য বাদলকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ভর্তি করিয়েছি। সেখানে সরকারিভাবে তার চিকিৎসা চলছে। বর্তমানে সে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছে। ওই ঘটনায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং বিভাগীয় তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে যাদের নাম আসবে তাদের বিরুদ্ধে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত ১ অক্টোবর (রোববার) সকালে কারাগারের নিচতলার ১ নম্বর কক্ষে পূর্ব শত্রুতার জেরে বেগমগঞ্জের জয়কৃঞ্চপুর গ্রামের সাহাব উদ্দিনের ছেলে নূর হোসেন বাদলকে কলম দিয়ে খুঁচিয়ে চোখ তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন আরেক আসামি মহিন উদ্দিন (৩০)। তিনি একলাশপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের অনন্তপুর গ্রামের হুমায়ুন কবিরের ছেলে। বাদল নারী নির্যাতন মামলার ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত এবং মাইন উদ্দিন মাদক মামলায় এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন।
ইকবাল হোসেন মজনু/এফএ/এএসএম