বেড়েছে শেরপুরের প্রতিমার কদর, যাচ্ছে পাশের ১০ জেলায়

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শেরপুর
প্রকাশিত: ১১:২৪ এএম, ০৯ অক্টোবর ২০২৩

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ উপলক্ষে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শেরপুরের কারিগররা। একই সঙ্গে এ জেলার মন্দিরগুলোতেও চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।

জানা গেছে, আকার ও নকশা ভেদে প্রতিটি প্রতিমা বিক্রি হয় ২৫ থেকে ৬০ হাজার টাকায়। গেলো কয়েক বছরের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকলেও কাঁচামালের খরচ বাড়ার আক্ষেপ কারিগরদের মুখে। রয়েছে কাঙ্ক্ষিত মজুরি না পাওয়ার অভিযোগও। শেরপুরের বিভিন্ন পাল পাড়ায় এখন ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কারিগররা। কাজের চাপ বেশি থাকায় পুরুষদের পাশাপাশি কাজ করছেন পরিবারের নারী সদস্যরাও।

jagonews24

প্রতিমা কারিগর দয়াল চন্দ্র পাল (৭৫) বলেন, এটা আমার বাপ দাদার পেশা। পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে ৬০ বছর ধরে আমি এ কাজ করছি, আমার ছেলেও প্রতিমা তৈরির কাজ করে। আমাদের তৈরি প্রতিমা পাশের জামালপুর, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, গাজীপুর, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন জেলায় যায়। যেভাবে জিনিসের দাম বাড়তেছে, এখন কাজ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এরপরও পূর্বপুরুষের কাজটা ধরে রাখার চেষ্টা করছি।

আরও পড়ুন: পূজার কেনাকাটায় সরগরম শাঁখারী বাজার

কারিগর গৌতম চন্দ্র পাল বলেন, এখন তো মাটির দামই বেশি। এছাড়া খড়ের দাম, রঙের দামও বেড়েছে। এবার অনেক অর্ডার আসলেও কাজ করা কঠিন হয়ে গেছে। যে হারে দাম বাড়ে, ওই হারে মজুরি বাড়ে না। তবুও অর্ডারের কাজ তো করতেই হবে।

jagonews24

গৌরী পাল বলেন, পরিবারের পুরুষদের পাশাপাশি শেষ সময়ে আমরাও এখন কাজে হাত লাগাচ্ছি। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কাজে বেশ ভাটা পড়ছে। এখন সবাই মিলে শেষ করে দ্রুত ডেলিভারি দেওয়াটাই বড় বিষয়।

এদিকে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ততা বেড়েছে জেলার বিভিন্ন মন্দিরগুলোতেও। শত বছরের পুরোনো মন্দিরগুলোতে চলছে ঐতিহ্য ধরে রাখার জোর প্রস্তুতি। পূজা চলাকালে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ আয়োজকদের।

আরও পড়ুন: দুর্গাপূজাকে ঘিরে ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরা

মার্চেন্ট ক্লাবের মিহির দত্ত বলেন, এই মন্দিরটি শতবর্ষী মন্দির। এখানে স্বাধীনতার পরে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক বড় বড় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা আসতেন। আমরা মার্চেন্ট ক্লাবের পক্ষ থেকে এবার পঞ্চাশ বছর পূর্তি দুর্গোৎসবের আয়োজন করতেছি। এটা একটা বড় ভাগ্যের বিষয়।

jagonews24

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুব্রত কুমার দে বলেন, পূজা উৎসবমুখর করতে পুলিশ, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করছি।

পূজোতে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে জানিয়ে শেরপুরের পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম, পূজার আগ মুহূর্তে প্রতিমা তৈরি, পূজা চলাকালে, প্রতিমা বিসর্জন ও পূজা পরবর্তী সময়ের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখবে জেলা পুলিশ। এছাড়া শতভাগ মণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও আয়োজকদের সম্প্রীতি কমিটি করা হয়েছে। সবার সহযোগিতা ও সমন্বয়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই পূজা সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।

আরও পড়ুন: পূজার মৌসুমে ক্রেতা সংকট কেরানীগঞ্জে, শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা

২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গা পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। এ বছর শেরপুরে ১৫৬টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা। জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রায় তিন শতাধিক প্রতিমা যাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

ইমরান হাসান রাব্বী/জেএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।