ভেসে গেছে সাড়ে ছয় হাজার পুকুরের মাছ, ক্ষতি ৪৩ কোটি টাকা
কিশোরগঞ্জে গত দুদিন ধরে টানা ভারী বর্ষণ হচ্ছে। আর এই বর্ষণে ছয় হাজার ৬৪১টি পুকুর ও ফিসারির প্রায় ৩৭ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। এতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন জেলার সাড়ে তিন হাজার মাছচাষি। অবকাঠামো ও মাছসহ প্রায় ৪৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ভেসে যাওয়া মাছের মধ্যে শিং, পাবদা, রুই ও পাঙাশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রয়েছে।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টায় কিশোরগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় পানির নিচে ১১ হাজার হেক্টর আমনক্ষেত
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় মোট সাড়ে তিন হাজার মাছচাষির ছয় হাজার ৬৪১টি পুকুর ও ফিসারি তলিয়ে গেছে। এতে ভেসে গেছে প্রায় সাড়ে ১৮শ টন মাছ। যার বাজার মূল্য ৩৭ কোটি ছয় লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এছাড়া পুকুর ও ফিসারির অবকাঠামোগত প্রায় ছয় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে অবকাঠামো ও মাছের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪৩ কোটি টাকা। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জেলার কটিয়াদী ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায়। কটিয়াদী উপজেলায় এক হাজার ৯২৫টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
আরও পড়ুন: নিকলিতে মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি
সাকি নামে এক মাছচাষি বলেন, একরাতের বৃষ্টিতেই আমার দুই ফিশারি ডুবে গেছে। পাড় ডুবে ওপর দিয়ে পানি যাচ্ছে। একেকটা ফিসারিতে তিন থেকে চার লাখ টাকার মতো মাছ ছিল।
আমিন সাদী নামে আরেক খামারি বলেন, আমার ২৫ শতাংশের একটি ফিশারি ছিল। রাতের বৃষ্টিতে ফিসারির পাড় তলিয়ে মাছ চলে গেছে। প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সাবেক চেয়ারম্যান মনসুর আলীর ৩৬ কাটা জমির বড় ফিসারি ছিল, এটাসহ সব তলিয়ে গেছে। এছাড়া এলাকার সব ফিসারি তলিয়ে গেছে। আমাদের মতো প্রান্তিক মাছচাষিদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। সরকার যদি প্রণোদনের ব্যবস্থা করে তাহলে হয়তো কিছুটা দাঁড়াতে পারবো।
আরও পড়ুন: তিনদিন ধরে আটকা দেড়শো পর্যটক, সেন্টমার্টিনে খাদ্য সংকট
মহিনন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী বলেন, আমার কয়েকটি ফিসারির পাড় তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম জানান, ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। বরাদ্দ এলে উপজেলা কমিটির মাধ্যমে চাষিদের পুনর্বাসন করা হবে।
এসকে রাসেল/জেডএইচ