তনু হত্যাকাণ্ড : প্রতিবাদ বিক্ষোভ অব্যাহত, গ্রেফতারের আশ্বাস


প্রকাশিত: ০৮:৩৪ পিএম, ২৫ মার্চ ২০১৬

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর হত্যাকাণ্ডের ৫ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো ঘাতকদের শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। এদিকে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারসহ বিচার দাবিতে কুমিল্লা মহানগরীসহ দেশব্যাপী বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও সভা-সমাবেশ কর্মসূচি পালন করছে। শুক্রবারও সকাল থেকে প্রতিবাদীরা নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত মোমবাতি প্রজ্বলন করেএ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
 
তনুর ঘাতকদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে শুক্রবার দিনব্যাপী বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী, অবকাশ ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন, সকল রোটার‌্যাক্ট ক্লাব (কুমিল্লা জোন), ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার, সেন্টার ফর হিউম্যান অ্যাসিস্টেনস ফাউন্ডেশন, রাজপথের প্রতিবাদী কণ্ঠ ব্যানারে বিভিন্ন সংগঠনের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী, শিক্ষার্থী বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মানববন্ধন করে। এ সময় হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।

এছাড়া শুক্রবার সন্ধা থেকে রাত পর্যন্ত নগরীর কান্দিরপাড় এলাকায় মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানায় তনুর সহপাঠিসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা।


এদিকে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী তনুর বাবা ইয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “গত ২০ মার্চ ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডে কাজ সেরে রাত সোয়া দশটায় বাসায় ফেরেন তিনি। তনুর মা জানান, তনু বাসায় ফেরেনি। টর্চলাইট নিয়ে মেয়ের খোঁজে বের হই। বাসার কাছেই একটি কালভার্ট আছে। কালভার্টের পাশে দেখি তনুর একটি জুতা পড়ে আছে। আমি চিৎকার দিয়ে উঠি। তারপর আমার ছোট ছেলে আনোয়ার হোসেন রুবেলও বাসা থেকে বেরিয়ে আসে। কিছু দূরে ওর মোবাইল ফোনটা পড়ে থাকতে দেখি। একটু উঁচু জায়গায় জঙ্গলের মধ্যে তনুকে পেলাম। মাথার নিচটা থেঁতলে আছে। ওর মুখে রক্ত আর আঁচড়ের দাগ। কয়েকজন প্রতিবেশী মিলে ওকে সিএমএইচে নিয়ে যাই।”

তিনি আরো বলেন, তনু দুইটি টিউশনি করত। বিকাল সাড়ে চারটার দিকে বাসা থেকে বের হতো। ওর মা আনোয়ারা বেগম এগিয়ে দিতেন। রাতে ফেরার পথেও ওর মা এগিয়ে নিয়ে আসতো। যেখানে টিউশনি করতো তার দূরত্ব বাসা থেকে ২শ’ গজ। হত্যাকাণ্ডের স্থান বাসা থেকে ১শ’ গজ দূরে।

তনুর বাবা বলেন, আমি এখানে ৩১ বছর চাকরি করি। আট বছর ধরে কোয়ার্টারে থাকি। সেনানিবাসের মতো সুরক্ষিত এলাকায় কারা ওকে মেরেছে জানি না, আল্লাহ দেখেছেন। আমি তনুর হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও কঠিন বিচার চাই।

প্রশাসনের জরুরি সভা
শুক্রবার সন্ধায় কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে তনু হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রেস ব্রিফিং করেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল। জেলা প্রশাসক জানান, পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি তদন্ত করছে। শিগগিরই ঘাতকদের চিহিৃত ও গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।

এ সময় পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেনসহ র‌্যাব, সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
 
মো. কামাল উদ্দিন/আরএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।