উকিল সাত্তারের ছেলে তুষার

বাবাকে সম্মান দেয়নি বিএনপি, আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিলে আপত্তি নেই

আবুল হাসনাত মো. রাফি আবুল হাসনাত মো. রাফি , ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশিত: ০৭:৪২ পিএম, ০৩ অক্টোবর ২০২৩

বহুল আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা ৩০ সেপ্টেম্বর মারা গেছেন। তার মৃত্যুতে সোমবার (২ অক্টোবর) আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ৫ নভেম্বর।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন উপনির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা শুরু করেছেন তাদের কর্মী-সমর্থকরা। এরমধ্যে আলোচনায় প্রয়াত সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞার একমাত্র ছেলে মাইনুল হাসান তুষার। তিনি নিজেও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে।

তফসিল ঘোষণার পর বিকেলে জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় সাত্তারপুত্র মাইনুল হাসান তুষার বলেন, আমার বাবা মারা গেছেন মাত্র কয়েকদিন হলো। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হঠাৎ করা হয়েছে। তাই অংশ নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াও কষ্টকর। তবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে আমাকে মনোনয়ন দিলে আমার কোনো আপত্তি থাকবে না। আমি আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচনে অংশ নেবো।

তিনি আরও বলেন, বাবা জীবনের প্রথম নির্বাচন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে জয়লাভ করেছিলেন। বিএনপিতে যোগদানের পর কোনো নির্বাচনে তিনি পরাজিত হননি। সর্বশেষ নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হিসেবে জয়লাভ করেন। আবার বিএনপির দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশে তিনি সংসদ থেকে পদত্যাগও করেন। কিন্তু তাকে বিএনপি সম্মান দেয়নি। তাই পদত্যাগের পর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হন। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ আমার বাবার পাশে ছিলেন, ওনাকে মৃত্যুর আগপর্যন্ত সম্মান দিয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমি এবং আমার পরিবার কৃতজ্ঞ।

প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে আছেন উল্লেখ করে তুষার বলেন, তিনি দেশে ফেরার পর আমি সাক্ষাৎ করবো। তিনি যদি মনে করেন আসন্ন উপ-নির্বাচনে আমাকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেবেন, তাহলে আমি নির্বাচন করবো। বিএনপি যেহেতু আমার বাবাকে সম্মান দেয়নি, সেই দল থেকে নির্বাচন করার প্রশ্নই আসে না।

উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা ১৯৭৯ সালে তৎকালীন কুমিল্লা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি ও জুনের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তৎকালীন ৪ দলীয় জোট সরকার থেকে টেকনোক্রেট মন্ত্রী হিসেবে আবদুস সাত্তার আইন, মৎস্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে তিনি নিষ্ক্রিয় ছিলেন।

২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারো ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য হিসেবে জয়লাভ করেন। ২ জানুয়ারি ২০২৩ সালে তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচন আওয়ামী লীগের সমর্থনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেন। বিষয়টি দেশজুড়ে তখন আলোচনা সৃষ্টি হয়।

এসজে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।