ফুলবাড়ী পোস্ট অফিস
মাথায় ছাদ ভেঙে পড়ার আতঙ্ক, বৃষ্টি হলে পড়ে পানি
দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা পোস্ট অফিস ভবন। ঝুঁকি নিয়েই চলছে অফিসের কার্যক্রম। পোস্ট অফিসে এসে শঙ্কায় থাকেন সেবাপ্রার্থীরা। এছাড়া কর্মীরাও সব সময় ভয়ে থাকেন কখন মাথায় ছাদ ভেঙে পড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ছাদ নির্মাণের যে রড ব্যবহার করা হয়েছে পলেস্তারা খুলে পড়ায় সেগুলো সব দেখা যাচ্ছে। সংস্কারের অভাবে ভবনটির ভেতর ও বাইরের গায়েও শ্যাওলা পড়ে গেছে। ছাদের কোনো কোনো স্থানে পলেস্তারা নেই। ছাদের দিকে তাকালে মরিচা ধরা লোহার রডগুলো চোখে পড়ছে।
পোস্টাল অপারেটর মিয়ন বাবু বলেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর আমিসহ এক সহকর্মীরা মাথার ওপর পলেস্তারা খুলে পড়ে আঘাত পাই। ফুলবাড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হই। প্রতিনিয়ত মাথায় ছাদ ভেঙে পড়ার আতঙ্ক নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
প্যাকার কাম-মেইল ক্যারিয়ার আবু সৈয়দ বলেন, বৃষ্টি হলে ছাদ চুয়ে পড়ে পানি। গরমেও ফ্যান চালাতে পারি না মাথায় ভেঙে পড়ার ভয়ে। সব সময়ই দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়ে কাজ করতে হয়।
পোস্ট অফিসে সেবা নিতে আসা সোহেল রানা বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে পোস্ট অফিসে আসা-যাওয়া করি। টাকা তুলতে প্রতিমাসে পোস্ট অফিসে আসতে হয়। কিন্তু এখানে এসে সবসময় ভয়ে থাকতে হয়, কখন ছাদ মাথায় ধসে পড়ে।
সেবা নিতে আসা আরেক গ্রাহক শেখ নেছারুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, সরকারি দপ্তরগুলোর খারাপ অবস্থা তা জানতাম কিন্তু এত খারাপ তা আমাদের জানা ছিল না। এই পোস্ট অফিস ভবনে এলে স্পষ্ট বোঝা যায়। যখন ভবন ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে তখন সরকারের টনক নড়বে।
ফুলবাড়ী উপজেলা পোস্ট মাস্টার মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, আমরা পোস্ট অফিসে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিয়ে আসছি। ছাদের পলেস্তারা খুলে পড়ে অফিসের অনেক মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে। গরমের মধ্যেও আমরা ভয়ে ফ্যান চালাই না। কারণ কখন যে ফ্যান আমাদের কিংবা সেবাগ্রহীতাদের ওপর খুলে পড়ে। এমতাবস্থায় আমরা সেবার মানও বাড়াতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, যে কাজগুলো না করলেই নয় সেগুলো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছি। দ্রুত এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে একটি আধুনিকমানের নিরাপদ পোস্ট অফিস ভবন নির্মাণ করা জরুরি। তা না হলে এক সময় সরকারি এই গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর থেকে সাধারণ মানুষরা পুরোপুরি মুখ ফিরিয়ে নেবে। কতবার যে ভবনের এমন অবস্থার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি তার কোনো হিসাব নেই। কিন্তু কোনো ফল পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র আশ্বাসই এখন আমাদের প্রধান ভরসা।
ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল প্রদীপ কুমার বলেন, ফুলবাড়ি উপজেলার জরাজীর্ণ পোস্ট অফিস ভবনের বিষয়টি আমরা জানি। হেড অফিসেও বিষয়টি জানানো আছে। আশা করছি, এই অর্থবছরে কাজ হয়ে যাবে।
এমদাদুল হক মিলন/এমআরআর/জেআইএম