মিরসরাইয়ে সংঘর্ষ
নিহত রুমনের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে টানাটানি
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে নিহত জাহিদ হোসেন রুমনের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে। ছাত্রলীগের দাবি সে তাদেরই কর্মী আর বিএনপির দাবি সে কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়।
এ নিয়ে শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মাসুদ করিম রানা নিহত জাহিদুল ইসলাম রুমনকে ছাত্রলীগের কর্মী দাবি করেন। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা রুমনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। তাকে পিটিয়ে পুকুরের ফেলে দেওয়া হয়। রুমন ওচমানপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী।
অপরদিকে মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শাহিনুল ইসলাম স্বপন জাগো নিউজকে বলেন, নিহত রুমন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নয়। আওয়ামী লীগের লোকজন তার মরদেহ নিয়ে অপরাজনীতি করছে।
অভিযোগ করে তিনি বলেন, রাত ৮টার দিকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল আমিনের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে সবকিছু তছনছ করে ফেলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন: মিরসরাইয়ে বিএনপি-আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ, নিহত ১
নিহত জাহিদ হোসেন রুমনের মামা ইউনুছ নবী প্রকাশ হোনা বলেন, আমার ভাগিনা নানাবাড়িতে থেকে ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। এরপর আর পড়েনি। শুক্রবার দুপক্ষের সংঘর্ষের সময় তাকে মেরে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। সে কোনো দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কি না সে বিষয়ে সঠিক জানি না।
জানা যায়, ৫ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে বিএনপির রোডমার্চ উপলক্ষে মিরসরাইয়ে একটি পথসভা করার কথা। এর প্রস্তুতি হিসেবে শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম উত্তরজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের এলাকা ওচমানপুরে একটি সভা হয়। সভা শেষে সবাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলেন। এ সময় আজমপুর এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের লোকজন হামলা করে বলে দাবি করেছে বিএনপি। এতে তাদের ১৫ নেতাকর্মী আহত হওয়ারও দাবি করে দলটি।
তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের দাবি ওচমানপুর ইউনিয়নের আজমপুর বাজারে বিএনপির লোকজন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় ওচমানপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ হাসান, মিরাজ, আরেফিন, সাঈদ খান দুখু ও রাফিসহ পাঁচ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া জাহিদ হোসেন রুমন নামে এক কিশোর নিহত হন।
মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ডাক্তার খোন্দকার নোমান সাঈরী জাগো নিউজকে বলেন, পাঁচজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। আহতদের মধ্যে হাসান নামের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া জাহিদ হোসেন রুম নামে এক কিশোরকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তার মাথায় রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং পানিতে ডুবে মারা গেছে বলে মনে হচ্ছে।
চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার (মিরসরাই সার্কেল) মনিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত ও একাধিক আহত হয়েছেন। হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বিএনপির পাঁচ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। তবে বিএনপি নেতা নুরুল আমিনের বাড়িতে হামলার বিষয়ে জানা নেই।
এসজে/এএসএম