আত্রাইয়ের বাঁধ ভেঙে পানিবন্দি দেড় হাজার পরিবার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ
প্রকাশিত: ০৭:০৭ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নওগাঁর মান্দা উপজেলায় আত্রাই নদীর চারটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রায় দেড় হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে এক হাজার বিঘা জমির আউশ ও আমন ধানের ক্ষেত।

এছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বেশকিছু এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদীপাড়ের মানুষ। এ অবস্থায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ টিকিয়ে রাখতে ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত এ নদীর পানি বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার পর্যন্ত পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।

নওগাঁয় আত্রাইয়ের বাঁধ ভেঙে পানিবন্দি দেড় হাজার পরিবার

মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা গেছে, বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নের সাতটি গ্রাম। এ ইউনিয়নের নুরুল্লাবাদ ও পারনুরুল্লাবাদ এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে ৪০০ পরিবার এবং ফকিন্নি নদীর তীরবর্তী এলাকায় আরও অন্তত ৬০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া প্রসাদপুর ইউনিয়নের বাইবুল্যা ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কয়লাবাড়ী এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫০০ পরিবার।

উপজেলার পারনুরুল্লাবাদ গ্রামের বাসিন্দা মজিবর রহমান বলেন, দীর্ঘদিনের পুরোনো এই বেড়িবাঁধটি সংস্কার না করায় প্রতিবছর বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে করে পরিবারের লোকজনসহ গরু-ছাগল নিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। ফসলের ক্ষেত তলিয়ে যায়। তাই আমরা স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি করছি।

নুরুল্লাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নদীর বাঁধ ভেঙে এ ইউনিয়নের সাতটি গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

নওগাঁয় আত্রাইয়ের বাঁধ ভেঙে পানিবন্দি দেড় হাজার পরিবার

প্রসাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, সোমবার রাত ২টার দিকে বাইবুল্যা এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রামের ৩০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম গোলাম আজম বলেন, কয়লাবাড়ী বেড়িবাঁধের ভাঙন স্থানটি মেরামত না করায় ওই স্থান দিয়ে পানি অনায়াসে গ্রামে ঢুকে পড়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ২০০ পরিবার। একই সঙ্গে তলিয়ে গেছে অন্তত ৩০০ বিঘা জমির আমন ক্ষেত।

মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন বলেন, বন্যার পানিতে নদী তীরবর্তী ফসলের জমি তলিয়ে গেছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা এলাকা ঘুরে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করছেন। দু-একদিনের মধ্যে ক্ষতির পুরো তথ্য জানা যাবে।

মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, এরইমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বস্তায় বালু ভর্তি করে মেরামতের কাজ চলছে। প্লাবিত এলাকা সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে। ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।

এমআরআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।