৩০ দিনের আলটিমেটাম

বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন নোটিশ পাওয়া সেই শিক্ষক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ০৭:২৩ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন টাঙ্গাইলের গোপালপুরের সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ পাল।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) তার আর্শীবাদ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। আগামী ১৫ ডিসেম্বর বিয়ের বাকি কাজ সম্পন্ন হবে।

শিক্ষক রনি প্রতাপ উপজেলার পালপাড়ার বাসিন্দা রতন লাল পালের ছেলে। কনে কালিহাতী উপজেলার মগড়া গ্রামের সত্য পালের মেয়ে স্বর্ণা পাল। তিনি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।

একমাসের মধ্যে বিয়ে করতে সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ পালকে নোটিশ দিয়েছিলেন সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম। তবে এ বিয়ের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।

রনি প্রতাপ পাল বলেন, ‘কোনো চাপে নয়, পরিবারের পছন্দেই বিয়ে করতে যাচ্ছি। সবার কাছে দোয়া চাই। এখন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছোট পরিসরে অনুষ্ঠান করায় কাউকে বলা হয়নি। বিয়ের অনুষ্ঠানে অবশ্যই প্রধান শিক্ষককে দাওয়াত দেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন: ৩০ কর্মদিবসে বিয়ে না করলে চাকরি হারাবেন শিক্ষক!

বিয়ের বিষয়ে অবগত না থাকায় প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে সহকারী শিক্ষক পদে সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগ দেন রনি প্রতাপ পাল। বিয়ে করতে একমাসের সময়সীমা বেধে দিয়ে গত ২৬ জুলাই তাকে নোটিশ দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম।

বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন নোটিশ পাওয়া সেই শিক্ষক

নোটিশে বলা হয়, ‘বিদ্যালয়ে যোগদানের পর আপনাকে বারবার মৌখিকভাবে তাগিদ দিয়েছি বিয়ে করার জন্য। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় কয়েক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও আপনি বিয়ে করেননি। বিদ্যালয়টিতে সহশিক্ষা চালু রয়েছে। অভিভাবকরা অবিবাহিত শিক্ষক নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। সুতরাং বিদ্যালয়ের বৃহত্তর স্বার্থে নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিয়ের কার্য সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে পাক্কা নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

নোটিশটি পাওয়ার দুদিন পর সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ প্রধান শিক্ষককে লিখিত জবাব দেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার অভিভাবকরা আমার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু বাংলাদেশের হিন্দুদের বিয়ের পাত্র-পাত্রী বাছাইয়ে গাত্র বা বর্ণের বিষয় রয়েছে। এছাড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শ্রাবণ থেকে কার্তিক পর্যন্ত বিয়ে করাটা শুভ মনে করে না। সুতরাং পারিবারিক ও ধর্মীয় রীতির কারণে আগামী অগ্রহায়ণ মাসে আমার অভিভাবকরা আমাকে বিয়ে করাবেন।’

নিয়মবহির্ভূত বিয়ের নোটিশ দেওয়া ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক তদন্ত চলমান। প্রধান শিক্ষকের বহিষ্কার চেয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সাবেক শিক্ষক ও স্থানীয়রা মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেন।

আরিফ উর রহমান টগর/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।