ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে গুনতে গুনতে উধাও সভাপতি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি যশোর
প্রকাশিত: ০৯:৪২ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বিদ্যালয়ের টাকা উত্তোলন করতে পরিচালনা পর্যদের সভাপতিকে নিয়ে ব্যাংকে গিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক। যৌথ সইয়ে তিন লাখ টাকা উত্তোলনের পর তারা দুজনে ব্যাংক ব্যবস্থাপকের কক্ষে বসে টাকা গুনছিলেন। কেবল দুই লাখ টাকা গণনা শেষ হয়। এসময় সভাপতির ফোনে একটি কল আসে। এসময় তিনি ফোনে কথা বলতে বলতে এবং এক লাখ টাকা গুনতে গুনতে ব্যাংক থেকে বেরিয়ে যান। পরে চেষ্টা করেও সেই টাকা উদ্ধার করতে পারেননি প্রধান শিক্ষক। অবশেষে ওই টাকা উদ্ধারের জন্য তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এমনই ঘটনা ঘটেছে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া সোনালী ব্যাংকে। ওইদিন রাতে বাঘারপাড়া থানায় অভিযোগ দেন নারিকেলবাড়িয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন।

নারিকেলবাড়িয়া বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্যদের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন হিরার (৪০) বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। তিনি উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের আনসার আলী মোল্যার ছেলে এবং উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া কলেজের ক্রীড়া শিক্ষক। একইসঙ্গে নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক হিরা।

লিখিত অভিযোগে এমদাদ হোসেন উল্লেখ করেন, তিনমাস আগে নারিকেলবাড়িয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে পিবিজিএসআই স্কিমের আওতায় পাঁচ লাখ টাকা সরকারি বরাদ্দ আসে। টাকা বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাবে ছিল। কয়েকদিন আগে ওই টাকা থেকে তিনি ও সভাপতি যৌথ সইয়ে তিন লাখ টাকা উত্তোলন করেন। ওই টাকা থেকে অবশিষ্ট দুই লাখ এবং বিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিল থেকে এক লাখসহ মোট তিন লাখ টাকা উত্তোলনের জন্য সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সভাপতি গিয়াস উদ্দিন হিরাকে সঙ্গে নিয়ে সোনালী ব্যাংক নারিকেলবাড়িয়া শাখায় যান এমদাদ হোসেন।

যৌথ সইয়ে তিন লাখ টাকা উত্তোলন করার পর তারা ব্যাংকের শাখার ব্যবস্থাপকের অফিস কক্ষে বসে টাকা গণনা করছিলেন। দুই লাখ টাকা গণনার পর সভাপতির মোবাইলফোনে একটি কল আসে। এসময় তিনি ফোনে কথা বলতে বলতে এবং এক লাখ টাকা গুনতে গুনতে ব্যাংকের বাইরে চলে যান। এরপর তাকে ফোনে কল করলে তিনি ব্যাংকে আসছেন বলে জানান। এর ১০ মিনিট পর কল করলে গিয়াস উদ্দিন জানান, তিনি একটি সালিশে আছেন, সালিশ শেষ করে টাকা নিয়ে স্কুলে আসবেন।

পরে বিদ্যালয়ে না আসেননি গিয়াস উদ্দিন। তার ফোনে কল করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর বিকেলে বিদ্যালয়ের এক কর্মচারীকে তার বাড়িতে পাঠানো হয়। তিনি তাকে শুক্রবারে টাকা দেবেন বলে জানান। এসময় গিয়াস উদ্দিন বলেন, এ ঘটনা যদি অন্য লোকদের বলা হয় তাহলে তিনি টাকা দেবেন না, যা পারবেন করবেন। পরে এদিন বিকেলে পুনরায় সভাপতিকে কল করে তাকে বিদ্যালয়ে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তিনি জানিয়ে দেন, তিনি শুক্রবারে টাকা দেবেন। যদি অন্য লোকদের বলেন তাহলে তিনি টাকা দেবেন না।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক এমদাদ হোসেন বলেন, ‘কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে বিদ্যালয়ের টাকা উদ্ধারের জন্য থানায় অভিযোগ দিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে কি না জানতে পারিনি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে গিয়াস উদ্দিন হিরার মোবাইলে কয়েকবার কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদত হোসেন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।’

মিলন রহমান/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।