অযোগ্যকে চাকরি দিতে রাজি না হওয়ায় প্রধান শিক্ষকের চোখে ঘুসি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পাবনা
প্রকাশিত: ০৮:৫৪ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

পছন্দের প্রার্থীকে চাকরি দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির (এসএমসি) সদস্য শিবলি সাদেক রাশেদ ও আরিফুল ইসলাম। কিন্তু ওই প্রার্থী অযোগ্য হওয়ায় প্রধান শিক্ষক ইসলাম উদ্দিন তাকে নিয়োগ দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে রাশেদ ও আরিফুল ক্ষুব্ধ হয়ে প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলা চালিয়ে তার চোখ জখম করেছেন।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশীনাথপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাকক্ষে ম্যানেজিং কমিটির বৈঠক চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করতে চাইলে সভাপতি আব্দুল বাতেন মিয়া তাতে বাধা দেন। বুধবার রাতে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক ইসলাম উদ্দিন।

জানা গেছে, কাশীনাথপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শেখ হাসিনা ডিজিটাল ল্যাবে ‘ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট’ পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। এতে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য শিবলি সাদেক রাশেদ ও আরিফুল ইসলাম তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে বলেন। কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজির (মহাপরিচালক) প্রতিনিধি ওই প্রার্থীকে অযোগ্য ও অদক্ষ বলে মত দেন। তিনিও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের জানান, ল্যাব চালাতে দক্ষ কর্মচারী প্রয়োজন। কিন্তু সভাপতি ও এসএমসির দুই সদস্য তাদের দাবিতে অনড় থাকেন।

jagonews24

এ নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে আলোচনায় বসেন সভাপতিসহ অন্য সদস্যরা। এসময় সদস্য রাশেদ তার নিজের লোককে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগের জন্য ডিজির প্রতিনিধির কাছে প্রধান শিক্ষককে তদবিরের জন্য যেতে বলেন। এতে প্রধান শিক্ষক রাজি হননি। এতে সদস্য শিবলি সাদেক রাশেদ ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষকের চোখে জোরে ঘুসি মারেন। আরিফুল ইসলামও তাকে মারধর করেন। এতে প্রধান শিক্ষক জ্ঞান হারান। পরে সহকারী শিক্ষকরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, এর আগে ওই নিয়োগের বিষয়ে আমাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন রাশেদ। তিনি প্রার্থীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেন করেন এবং তা থেকে আমাকেও ভাগ নিতে বলেন। এতে রাজি না হওয়ায় অন্যদের মাধ্যমে আমাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।

তিনি বলেন, সভা চলাকালে সভাপতির সামনেই আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন দুই সদস্য। এক পর্যায়ে ‘শালাকে পিটিয়ে শেষ করে দেব’ বলেই আমার চোখের ওপর ঘুষি মারেন রাশেদ। পরে এ ঘটনায় আমি সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ দিয়েছি।

প্রধান শিক্ষক ইসলাম আরও বলেন, আমার চোখ মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছে। আমি এখন চিকিৎসাধীন আছি। আমি এর বিচার চাই। প্রয়োজনে আমি আদালতের শরণাপন্ন হব।

তবে অভিযুক্ত শিবলি সাদেক রাশেদ মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, একটু কথাকাটাকাটি হয়েছে মাত্র।

বিষয়টি নিয়ে জানতে বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুল বাতেন চৌধুরীর মোবাইলে কল করলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন।

এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমিন ইসলাম জুয়েল/এমআরআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।