হাঁস চুরির কথা বলে দেওয়ায় কিশোরকে হত্যা, যুবকের যাবজ্জীবন

নোয়াখালীতে কিশোর হত্যা মামলায় আলী হোসেন (২০) নামে এক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ নিলুফার সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আসামি আলী হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এ মামলায় অপর আসামি অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাকে গাজীপুরের টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে রাখা হয়েছে এবং শিশু আদালতে তার বিচার চলমান আছে। দণ্ডপ্রাপ্ত আলী হোসেন বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের তনু ব্যাপারী বাড়ির দেলোয়ার হোসেন চৌধুরীর ছেলে।

আদালত সূত্র জানায়, মামলায় অভিযুক্ত দুই আসামি আলী হোসেন ও ফরহাদ হোসেন এলাকার একটি বাড়ি থেকে হাঁস চুরি করার সময় দেখে ফেলে শাওন। পরে শাওন বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে আলী হোসেন ও ফরহাদ তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
২০১৮ সালের ১৪ আগস্ট বিকেলে কৌশলে একটি নৌকাযোগে শাওনকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি বিলের মাঝখানে নিয়ে যান আলী ও ফরহাদ। সেখানে ফরহাদ প্রথমে শাওনের গোপনাঙ্গে লাথি মারার পর শ্বাসরোধে হত্যা করেন। আলী হোসেন একটি রশি দিয়ে শাওনের দুই হাত পেছন থেকে বেঁধে নৌকা থেকে পানিতে ফেলে দের।

শাওনের সন্ধান না পেয়ে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন। ১৭ আগস্ট বিলের মধ্যে ঘাস কাটতে গিয়ে শাওনের মরদেহ ভাসতে দেখেন প্রতিবেশী সোহরাব হোসেন।

মরদেহ উদ্ধারের পরদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্থানীয় মফিজ মার্কেট এলাকায় লোকজনের উপস্থিতিতে শাওনকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে ফরহাদ ও আলী হোসেন। তাদের দুজনকে আটকের পর পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা। পরে এ ঘটনায় নিহত শাওনের মা পারুল আক্তার বাদী হয়ে ওই বছরের ১৮ আগস্ট বেগমগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২০১৯ সালের ২৬ মে আসামি ফরহাদ ও আলী হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতের বিবেচনায় আসামি ফরহাদ শিশু হওয়ায় তাকে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। বিচারকার্য চলে আলী হোসেনের।

বুধবার দুপুরে আসামি আলী হোসেনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ, উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আসামি আলী হোসেনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেন।

জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল জাগো নিউজকে বলেন, আসামি আলী হোসেনের বয়স বিবেচনায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। অপর আসামির বিচারকার্য চলমান আছে।

ইকবাল হোসেন মজনু/এসজে/জিকেএস