সেই যমজ শিশু যাচ্ছে ছোটমণি নিবাসে, মায়ের ঠাঁই হবে আশ্রয়কেন্দ্রে
যশোরে যমজ সন্তানের জন্ম দেওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ড। মানসিক ভারসাম্যহীন মাকে পাঠানো হবে গাজীপুরে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে আর যমজ সন্তানকে পাঠানো হবে খুলনার ছোটমণি নিবাসে।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার পুলিশের আবেদনের শুনানিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-১ এর বিচারক মানসিক ভারসাম্যহীন নারী ও দুই নবজাতকের বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডকে দায়িত্ব দেন।
আরও পড়ুন: পাগলিটা মা হলেও দায় নিলো না কেউ
দুপুরে যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার। শিশু কল্যাণ বোর্ডের সদস্য সচিব সমাজ সেবা অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক অসীত কুমার সাহা বলেন, যমজ সন্তানকে পাঠানো হবে খুলনা ছোটমণি নিবাসে আর তাদের মা ভারসাম্যহীন নারী ঠাঁই হচ্ছে গাজীপুরের কাশিমপুর সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে। তবে এখই তাদের পাঠানো হচ্ছে না। বাচ্চাদের কোনো নামও রাখা হয়নি। এখনো আইনি বাধ্যবাধকতা আছে। আশা করছি চলতি সপ্তাহে তাদের পাঠাতে পারবো।
এদিকে ১৫ দিন ধরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে যমজ সন্তান ও তাদের মা চিকিৎসাধীন। তারা সুস্থ আছেন। কিন্তু তাদের দায়িত্ব স্বজনদের কেউ নিতে রাজি হননি। এতে ওই মা ও তার দুই সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়ে প্রশাসন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হারুন-অর রশিদ বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী ও যমজ সন্তান সুস্থ আছে। যেকোনো সময় তাদের হাসপাতাল থেকে নেওয়া যাবে। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় ওই নারী নার্সদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে। ওয়ার্ডের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ভারসাম্যহীন মা ও যমজ সন্তানের কাছে ফিরলেন আনসার সদস্যরা
৩ সেপ্টেম্বর যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ধলগ্রাম ইউনিয়নের নতুন গ্রামের জামিরুল ইসলামের খড়ের ঘরে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী যমজ সন্তান প্রসব করেন। পরে গৃহকর্তা জামিরুল ওই নারীকে বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়। এরপর থেকে মা ও দুই নবজাতক সেখানেই চিকিৎসাধীন।
হাসপাতালে ভর্তির সময় ওই নারীর পরিচয় অজ্ঞাত থাকলেও পরবর্তীতে পিবিআই পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। জানা যায়, ওই নারীর নাম মোসাম্মৎ মাহিনুর। তিনি খুলনার তেরখাদা উপজেলার বারাসাত গ্রামের চান্দু মিয়ার মেয়ে। পিবিআই মাহিনুরের মা ও ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা দায়িত্ব নিতে রাজি হয়নি। এ অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় সমাজসেবা অফিস, জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রসূতি মা ও দুই নবজাতকের দেখাশোনা করছে। আর দু’জন আনসার ভিডিপি সদস্য সার্বক্ষণিক তাদের দেখভাল করছেন।
মিলন রহমান/এসজে/জেআইএম