নাসিক কাউন্সিলর
সরকার না থাকলে এসপির চাকরি থাকবে না, ডিসি ট্রান্সফার হয়ে যাবে
‘সরকার না থাকলে এসপির চাকরি থাকবে না। একজন ডিসিও মনে মনে জানেন এই সরকার না থাকলে আমার ট্রান্সফার হয়ে যাবে’ বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিও ক্লিপে তাকে এমন বক্তব্য রাখতে দেখা যায়।
চার মিনিটের ওই ভিডিও ক্লিপটি এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। মূলত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমালোচনা করার সময় তিনি এ বক্তব্য রাখেন।
কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক ও মহানগর কৃষকলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক। তিনি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের অনুসারী।
ভিডিও ক্লিপে স্থানীয় ওই গণমাধ্যমের সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে কাউন্সিলর ইফতেখার আলমকে বলতে দেখা যায়, ‘দেশ ছেড়ে তারাই পালায় যাদের আরেক দলের সঙ্গে কোনো লিয়াজোঁ নেই; যিনি আওয়ামী লীগের কট্টর সমর্থক, যেটার মধ্যে কোনো আপস থাকে না। যদি অন্যান্য আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ দেশে থাকতে পারে তাহলে শামীম ওসমান দেশে থাকতে পারবে না কেন? বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মান্নান সাহেবের স্ত্রীর সঙ্গে আমার মায়ের ভালো সম্পর্ক ছিল। মান্নানের কাছে আমার মা যায়তো। এতো ভালো সম্পর্ক থাকার পরও আমি জেল থেকে বাঁচতে পারি নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘কীভাবে টেকনিক প্রয়োগ করে সরকারের সঙ্গে খাতির রাখা যায় আবার বিরোধী দল সাজানো যায় তা মেয়র আইভী ভালো করেই জানেন। তিনি আবার বাজেট অধিবেশনে বলেন, এসপি, ডিসি নাকি তার কথা শুনে না। আপনাকে পাস করাইলে কী লাভ হয়? দলেরই বা কী লাভ হয়? একজন এসপি জানেন, সরকার না থাকলে তার চাকরি থাকবে না। একজন ডিসিও মনে মনে জানেন, এই সরকার না থাকলে আমার ট্রান্সফার হয়ে যাবে, কোন জায়গায় কোন শাস্তি দেবে। তার ভেতর তো সেই ভয় নাই। শামীম ওসমান এতো বড় একটা জনসভার ডাক দিয়েছেন। বিএনপি তো ক্ষমতায় আসলে আমাকে দৌড়ান দিতে পারে। তো ওনাকে (মেয়র আইভী) তো আর দৌড়ান দেবে না। তাকে উল্টো আরামে রাখা হবে।’
জানতে চাইলে নাসিক ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন বলেন, ‘আমি এই বক্তব্যটা দিলেও ওইভাবে বলেনি। ওই ভিডিওতে আমার সম্পূর্ণ কথা প্রকাশিত হয়নি। তাই সবাই ভুলভাবে বিষয়টা নিচ্ছেন। মূলত আমি বলেছিলাম, যারা শিক্ষিত-মেধাবী, যারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানে তারা স্বাভাবিকভাবে এই সরকারের পক্ষ নেয়। পাশাপাশি যারা সঠিক ইতিহাসের পক্ষে থাকেন তখন অন্য সরকার ক্ষমতায় এলে তাদের চাকরিতে থাকা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়।’
রাশেদুল ইসলাম রাজু/এসআর/এএসএম