ভেঙে যাওয়া সেতু নির্মাণে উদ্যোগ নেই, নড়বড়ে ভাসমান সাঁকোই শেষ ভরসা

আব্দুস সালাম আরিফ আব্দুস সালাম আরিফ , জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী
প্রকাশিত: ১১:৫৫ এএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পাখিমাড়া খালের ওপর ভেঙে পড়া সেতুটি নির্মাণে দীর্ঘদিনেও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে ভোগান্তি নিয়েই নীলগঞ্জ ইউনিয়নের হাজারো মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে। স্থানীয়রা ব্যক্তিগত অর্থায়নে প্লাস্টিকের ড্রাম ব্যবহার করে ভাসমান সাঁকো তৈরি করলেও সেটি এখন ঝুঁকির মধ্যে আছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) বলছে, সেতু নির্মাণের জন্য তারা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের পাশাপাশি কোনো একটি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ করছে।

jagonews24

কৃষিসমৃদ্ধ কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়ন। এ অঞ্চলের কৃষকরা সারাবছর কৃষিকাজে ব্যস্ত সময় পার করেন। কয়েক বছর আগে পাখিমাড়া এবং নীলগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যকার পাখিমাড়া খালের ওপর নির্মিত স্টিলের সেতুটি ভেঙে পড়লে দুই ইউনিয়নের মধ্যে সড়ক পথের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর কয়েক দফায় স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে চাঁদা তুলে ভাসমান সাঁকো নির্মাণ করে হাঁটার ব্যবস্থা করেন। তবে কিছু দিন যেতে না যেতেই তা এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় কৃষক জাকির গাজী বলেন, ২০১৫ সালের প্রথম দিকে স্টিলের কাঠামো দিয়ে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করে। তবে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সেতুটি পুরোপুরি ভেঙে খালে পড়ে যায়। এরপর আমরা স্থানীয়রা ৬৭টি প্লাস্টিকের ড্রাম দিয়ে ভাসমান একটি সাঁকো তৈরি করি। এতে আমাদের সে সময় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। আমরা স্থানীয়রা চাঁদা তুলে মাঝেমধ্যে এটি মেরামত করছি। তবে এখন ভাসমান সাঁকো দিয়ে চলাচল একেবারেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে।

jagonews24

স্থানীয় কৃষক সুলতান গাজী বলেন, ভাসমান সেতু দিয়ে স্থানীয়দের ঝুঁকি নিয়ে চলাচলের পাশাপাশি কৃষকদের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতেও সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এ নিয়ে কয়েক দফা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তারা যোগাযোগ করেও কোনো ফল পাননি। বর্তমানে নীলগঞ্জ ইউনিয়নে উৎপাদিত সব শাকসবজি মাথায় করে পূর্বপাড় থেকে পশ্চিমপাড় পাখিমাড়ায় নিয়ে আসতে হচ্ছে। এছাড়া সার, বীজ পরিবহনেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালী) আসনের সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান মহিব জাগো নিউজকে বলেন, গুরুত্ব বিবেচনায় দ্রুত সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে। এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ। আমি নিজেই এটির নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবো।

jagonews24

তবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণ জাগো নিউজকে বলেন, সেতুটি নির্মাণের জন্য দুটি প্রকল্পে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পিডি স্যার এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সেতুটির ফিজিবিলিটি স্টাডিও শেষ। গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি সেতু নির্মাণের তালিকার মধ্যে এটি অন্তর্ভুক্ত আছে।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ লতিফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, গুরুত্ব বিবেচনা করে সেতুটি নির্মাণের জন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্পের একটিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেতুটি কোনো একটি প্রকল্পের ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আমরা যোগাযোগ করছি।

এসজে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।