জাগো নিউজে সংবাদ প্রকাশ
ভারসাম্যহীন মা ও যমজ সন্তানের কাছে ফিরলেন আনসার সদস্যরা
যশোরে মানসিক ভারসাম্যহীন সেই নারী মাহিনুর ও তার যমজ দুই সন্তানের কাছে ফিরেছেন আনসার-ভিডিপি সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হাসপাতালে ফিরে যমজ শিশুর দায়িত্ব নিয়েছেন আনসার-ভিডিপি সদস্য সাহারা খাতুন।
এর আগে বুধবার রাতে নবজাতক দু’টিকে নার্সদের কাছে রেখে চলে যান আনসার সদস্যরা। বৃহস্পতিবার সকালে এ নিয়ে জাগো নিউজে সংবাদ প্রকাশ হলে প্রশাসনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
৩ সেপ্টেম্বর যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ধলগ্রাম ইউনিয়নের নতুন গ্রামের জামিরুল ইসলামের বিচালির (খড়) ঘরে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী যমজ সন্তান প্রসব করেন। পরে গৃহকর্তা জামিরুল ওই নারীকে বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এরপর থেকে মা ও দুই নবজাতক যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হাসপাতালে ভর্তির সময় ওই নারীর পরিচয় অজ্ঞাত থাকলেও পরবর্তীতে পিবিআই ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। জানা যায়, ওই নারীর নাম মোসাম্মৎ মাহিনুর। তিনি খুলনার তেরখাদা উপজেলার বারাসাত গ্রামের চান্দু মিয়ার মেয়ে। পিবিআই মাহিনুরের মা ও ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা মাহিনুর ও তার সন্তানদের নিতে রাজি হননি।
এই অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় সমাজসেবা অফিস, জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রসূতি মা ও দুই নবজাতকের দেখাশোনা করছিল। আর সার্বক্ষণিক দেখভালের জন্য দু’জন করে নারী আনসার সদস্য নিয়োজিত ছিলেন।
বুধবার রাত ৮টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন শেষ করে আনসার সদস্য সাহারা খাতুন ও রাখী আক্তার শিশু দু’টিকে নার্সদের হাতে তুলে দিয়ে চলে যান। এরপর আর কোনো আনসার সদস্য সেখানে যাননি। এ ঘটনার পর রাতেই হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানান। পাশাপাশি শিশু দু’টির নিরাপত্তার জন্য হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে জাগো নিউজে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে দুপুরে আবার ওই দুই নবজাতকের কাছে আনসার-ভিডিপি সদস্যদের পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার পর হাসপাতালে গিয়ে নবজাতকদের দায়িত্ব নেন আনসার ভিডিপি সদস্য সাহারা খাতুন।
তিনি জানান, স্যারদের নির্দেশে তিনি হাসপাতালে এসে শিশুদের দেখাশোনা করছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, বুধবার রাতে আনসার সদস্যরা শিশু দু’টিকে নার্সদের হাতে দিয়ে চলে যাওয়ার পর তিনি বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে আবার আনসার সদস্যরা হাসপাতালে এসে শিশুদের দেখাশোনা করছেন।
যশোর জেলা আনসার কমান্ড্যান্ট সঞ্জয় কুমার সাহা জানান, হাসপাতালে মা ও সন্তানদের দেখাশোনার জন্য স্বেচ্ছাসেবী ভিডিপি সদস্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারা নিয়মিত বেতনভাতাভোগী নন। ডিউটি রোস্টার নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। পরবর্তীতে তা ঠিক করে আবার তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মিলন রহমান/এফএ/জেআইএম