বিদ্যালয়ের চারপাশে কচুরিপানা-মেঝেতে পানি, বন্ধ পাঠদান

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ০৯:২৭ এএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বিদ্যালয়ের চারপাশে কচুরিপানা আর মেঝেতে পানি ওঠায় বন্ধ রয়েছে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার রাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। এতে পিছিয়ে পড়াসহ ফলাফল বিপর্যয়ের শঙ্কায় রয়েছে শিক্ষার্থী আর অভিভাবকরা। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে না পারায় হতাশ শিক্ষকরাও।

সরেজমিন দেখা গেছে, বিদ্যালয়টির পানি মেঝে থেকে নেমে গেলেও চারপাশে কচুরিপানা থাকায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে পারছেন না শিক্ষকরা। নৌকায় নিয়ে শিক্ষকরা যাতায়াত করলেও শিশু শিক্ষার্থীরা যেতে পারছে না বিদ্যালয়ে।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় ৭৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১১টি মাদরাসা এবং তিনটি কলেজ রয়েছে।

আরও পড়ুন: ৪ গ্রামের দুঃখ একটি কাঠের সাঁকো

রাশড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তানজিলা আক্তার তন্নি বলে, বর্ষা এলেই স্কুলের চারপাশে পানি ওঠে। আমরা পড়াশোনা করতে পারি না। অন্যান্য স্কুল খোলা থাকলেও আমাদের স্কুল বন্ধ। এতে আমরা পড়াশোনা থেকে পিছিয়ে যাচ্ছি। আমরা সুন্দর পরিবেশে পড়াশোনা করতে চাই।

বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী প্রসেনজিৎ সরকার বলে, কষ্ট করে আমাদের ক্লাসে আসতে হয়। চারপাশে পানি আর কচুরিপানা দিয়ে ভরে গেছে। আমরা সুন্দর পরিবেশে পড়াশোনা করতে চাই।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, দুই বছর ধরে শুনছি বিদ্যালয়টিতে নতুন ভবন করা হবে। এখনো কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এ এলাকাটি নিম্নাঞ্চলে হওয়ায় বর্ষাকাল আসলে বিদ্যালয়ের মাঠ আর মেঝেতে পানি ওঠে। তখন শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এখন বিদ্যালয়ের মেঝে থেকে পানি নেমে গেছে। তবে বিদ্যালয়ের চারপাশেই কচুরিপানা রয়েছে। দ্রুতই বিদ্যালয়টিতে নতুন ভবন করা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন: মাথায় ছাদ ভেঙে পড়ার আতঙ্ক, বৃষ্টি হলে চুয়ে পড়ে পানি

রাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসনে আরা আক্তার পপি বলেন, আমি ২০১৮ সালে এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছি। যোগদানের পর থেকেই আমি চেষ্টা করছি নতুন ভবন ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র আনার জন্য। নিচে খোলা থাকবে আর উপরে পাঠদান চলবে। গতবছরও আবেদন করছি। ২০২১ সালে যখন বড় বন্যা হয় তখন ছবিসহ আবেদন করেছি। তবে এখনও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেননি। এবছরও আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মেসেঞ্জারে বিদ্যালয়ের ছবি পাঠিয়েছি। উনারা যদি ব্যবস্থা না নেয়, আমার তো কিছুই করার নেই।

তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়ের চারপাশে কচুরিপানা রয়েছে। বিদ্যালয়ের মেঝেতে এক ফুট পানি ছিল। দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার তিনটি পরীক্ষা বিদ্যালয়ে নিতে পারলেও বাকি তিনটি পরীক্ষা রাশড়া করিম বাজার গ্লোবাল কিন্ডার গার্ডেনে নিতে হয়েছে। তিনটি পরীক্ষা নেওয়ার পর বিদ্যালয়ের মেঝেতে পানি ওঠে। পানি মেঝে থেকে নেমে গেলেও বিদ্যালয়ের চারপাশে কচুরিপানা রয়েছে। আশা করছি সামনে সপ্তাহে থেকে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চালু করতে পারবো। জানতে পেরেছি এই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন আসবে। নির্মাণ লিস্টের ২৭ নম্বর এ আছে। যদিও তালিকায় বিদ্যালয়টির নাম প্রথম থাকার কথা।

আরও পড়ুন: বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সেতুতে সাঁকো, দুর্ভোগ চরমে

এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আনজুম আরা বেগম বীথি জানান, আমি এই উপজেলাতে নতুন এসেছি। শুনেছি ওই বিদ্যালয়টিতে প্রতি বছরই পানি ওঠে। রাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছি। শুধু রাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় না উপজেলার আরও কিছু বিদ্যালয়ে পানি উঠে। এই বিদ্যালয়গুলোতে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র করা প্রয়োজন।

আরিফ উর রহমান টগর/জেএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।