বরিশালে স্ত্রী হত্যায় স্বামীসহ ২ জনের যাবজ্জীবন
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী ও তার সহযোগীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি উভয়কে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বরিশালের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা এ রায় ঘোষণা করেন।
বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. কামরুল ইসলাম। রায়ে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর এক আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় তিনজনই এজলাসে উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডিতরা হলেন- গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার বেদগ্রামের বাসিন্দা মৃত আনোয়ার শেখের ছেলে তামিম শেখ (৪৪) ও কোটালীপাড়া উপজেলার বেপারীপাড়া মৃত ইদ্রিস শেখের ছেলে রুবেল শেখ (৪২)। খালাস পাওয়া জুলহাস শেখ (৪৮) গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বেদগ্রামের (দক্ষিণপাড়া) বাসিন্দা মৃত সালাম শেখের ছেলে।
মামলার বরাত দিয়ে বেঞ্চ সহকারী কামরুল ইসলাম জানান, দুই সন্তানের জননী বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার নগরবাড়ী এলাকার বাসিন্দা মৃত করিম শাহের কন্যা রাশিদা বেগমের প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়। এরপর এক সন্তানের জনক তামিম শেখের সঙ্গে রাশিদার পরিচয় ও প্রেম হয়। পরে তারা বিয়ে করে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল গ্রামের হেমায়ে মোল্লার বাড়িতে ভাড়ায় বাস করতেন।
২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি স্বামী তামিম শেখ রাশিদাকে মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে গোপালগঞ্জে নিয়ে যান। ১০ মাস বয়সী শিশু তানিমকে নিয়ে গোপালগঞ্জ গেলে রাশিদাকে নিয়ে একটি আবাসিক হোটেলে ওঠে স্বামী তামিম। পরদিন রাতে রাশিদাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে থ্রি-হুইলারে রওনা দেন। থ্রি হুইলারে ছিলেন রুবেল ও জুলহাস। পরে গোপালগঞ্জ আগৈলঝাড়া মহাসড়কের বাইপাস ব্রিজের পাশে নির্জন স্থানে এসে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে রাশিদাকে হত্যা করেন তারা। ব্রিজের অদূরে হান্নান মোল্লার ঘেরের পাশে ফেলে যায়। গভীর রাতে পথচারীরা দশ মাস বয়সী শিশু তানিমের কান্না শুনে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় রাশিদার ভাই মো. আমিন শাহ বাদী হয়ে ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি আগৈলঝাড়া থানায় মামলা করেন। থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম ২০২২ সালের ৩১ জুলাই তিনজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেন। বিচারক আটজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এ রায় ঘোষণা করেছেন।
শাওন খান/এসজে/এমএস