আচার বিক্রি করে সংসার চলে বিল্লালের
দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে নানা ধরনের আচার তৈরি করে বিক্রি করেন বিল্লাল হোসেন (৫৬)। সকাল হলেই নিজের বানানো আচার ভ্যানে নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন তিনি। শহরের অলিগলি ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন তা। তার আচারের ভক্ত শিশু থেকে শুরু সব বয়সী মানুষ।
আচার লাগবে আচার, নানান স্বাদের আচার, মজাদার আচার- বিল্লালের এমন ডাকে ছুটে আসেন আচারপ্রেমীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের খৈয়েরভাঙ্গা এলাকার মৃত সামচু ফরাজীর ছেলে মো. বিল্লাল হোসেন। প্রায় ১৫ বছর আগে নিজ এলাকাতেই আচার বিক্রি শুরু করেন। কিন্তু তেমন সাড়া না পেয়ে মাদারীপুর শহরে চলে আসেন। শহরের কুকরাইল এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকেন ভাড়া বাসায়। দুই মেয়ে ও এক ছেলের জনক বিল্লাল। এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলেও বিয়ে করে বউ নিয়ে আলাদা থাকেন। ছোট মেয়ে সামছুর নাহার হ্যাপি ও স্ত্রী হোসনে আরা বেগমকে নিয়ে তার ছোট সংসার।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়া মিস্ত্রি বানালেন ‘কাঠের মাইক্রো’
বিল্লাল হোসেন বলেন, যখন যে টক জাতীয় ফল পাই তা দিয়েই আচার বানাই। আমি প্রতিদিন রাতে ঘরোয়া পরিবেশে নিজ হাতেই আচার তৈরি করি। সকালে বড় বড় স্টিলের পাত্রে আচারগুলো ঢেলে নিজের পায়ে চালিত ভ্যানগাড়িতে সাজিয়ে রাখি। আচারে যেন রাস্তার ধুলোবালি ও ময়লা, পোকা, মাছি না পড়ে সেজন্য ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখি। সব সময়ই আমার ভ্যানে বড়ই, তেঁতুল, আম, আমড়া, চালতাসহ নানা পদের সুস্বাদু টক-মিষ্টি-ঝাল আচার থাকে।
তিনি আরও বলেন, সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন স্কুলের সামনেসহ অলিগলি ঘুরে আচার বিক্রি শেষে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরি। প্রতিদিন ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকার মতো আচার বিক্রি হয়। এই টাকা দিয়েই আমার পরিবারের ভরণপোষণ চলে।
বিল্লাল হোসেনের এক প্রতিবেশি সজিব হোসেন বলেন, বহু বছর ধরেই দেখে আসছি বিল্লাল নিজ হাতে আচার বানিয়ে তা বিক্রি করেন। অনেকের কাছেই বিল্লালের আচার অনেক প্রিয়।
আচার কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, আমার মেয়ে লুবাবার আচার অনেক পছন্দ। তাই আচার কিনতে এসেছি। তাছাড়া আমার মেয়েও বিল্লালের আচার অনেক পছন্দ করে।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে পানির অভাবে নষ্ট হচ্ছে পাট
মাদারীপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী রিমা আক্তার বলেন, রাস্তায় যখনই বিল্লালের আচার চোখে পড়ে, তখনই কিনে খাই। তার আচার আমার অনেক পছন্দ।
মাদারীপুরের উন্নয়ন সংস্থা দেশগ্রামের নির্বাহী পরিচালক এবিএম বজলুর রহমান রুমি (মন্টু খান) বলেন, এটা খুব ভালো কাজ। বিল্লাল কারো ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজেই আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/জেএস/এএসএম