সিসি ব্লকে ধস
ভাঙন আতঙ্কে মেঘনা তীরের লাখো মানুষ
উজান থেকে নেমে আসা মেঘনা নদীর পানির চাপে ভোলার ইলিশায় নদীতীর সংরক্ষণের সিসি ব্লকে ধস দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে ভোলার শহররক্ষা বাঁধ, ইলিশা লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট ও হাজার হাজার বসতঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে ধস প্রতিরোধে কাজ শুরু করেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা মেঘনা নদীর পানির প্রচণ্ড চাপে গত দুই দিন ধরে ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের তালতলি লঞ্চঘাট এলাকার দুইটি পয়েন্টে ৭০ মিটার ব্লকে ধস সৃষ্টি হয়েছে। দুইটি পয়েন্টের মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ সিসি ব্লকে ধস দেখা দিয়েছে। আর এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে ভোলা শহররক্ষা বাঁধ, ভোলা-ঢাকা, ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের লঞ্চঘাট, ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরিঘাটসহ তিনটি ইউনিয়নের হাজার হাজার বসতঘর, ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাট এলাকার মো. সাইদুল হক, মো. কালু, মো. জাহাঙ্গীর, মো. মহসিন ও মো. ইয়াসিন আরাফাত বলেন, কয়েক বছর আগে সিসি ব্লক দিয়ে নদীভাঙন বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু গত বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) থেকে ইলিশার তালতলি লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকার দুইটি পয়েন্টে ব্লক বাঁধে ধস নেমেছে। এতে করে আমরা দুশ্চিন্তায় পড়েছি। যদি ব্লক বাঁধ আরও ধসে যায় তাহলে শহররক্ষা বাঁধ ভেঙে তিনটি ইউনিয়নের হাজার হাজার বসতঘর, ফসলি জমি, স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে পড়বে।
তারা আরও বলেন, বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ধস প্রতিরোধে কাজ করলেও আমরা চাই স্থায়ীভাবে সিসি ব্লক স্থাপন করে ভাঙন রোধ করা হোক।
পূর্ব ইলিশা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন ছোটন জানান, ওই এলাকার ব্লক বাঁধ ধসের খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানোর পর তারা জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু করেছে। কিন্তু তারা চান অতি দ্রুত সিসি ব্লক স্থাপনের মাধ্যমে ভাঙন রোধ করা হোক।
আরও পড়ুন: বরগুনায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন, ঝুঁকিতে ১০ হাজার মানুষ
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো ডিভিশন-১) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান জানান, ব্লক বাঁধ ধসের স্থানের দুইটি পয়েন্টেই জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে।
৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের মাধ্যমে ধস প্রতিরোধের কাজ চলছে। শুকনো মৌসুমে পানির স্রোত কমলে স্থায়ীভাবে সিসি ব্লক স্থাপনের আশ্বাসও দেন তিনি।
২০১৭-২১ সাল পর্যন্ত একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভোলার পূর্ব ইলিশার সাজিকান্দি থেকে রাজাপুরের জোর খাল পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ ও সাড়ে ৩ কিলোমিটার সিসি ব্লক দ্বারা বাঁধ সংরক্ষণ করা হয়।
এফএ/এএইচ/এএসএম