উত্তর চট্টগ্রামজুড়েই রুবেলের ‘মালাই’ চায়ের কদর
চট্টগ্রামের মিরসরাই সদরের রুবেলের ‘মালাই’ চায়ের সুনাম ছড়িয়েছে পুরো উত্তর চট্টগ্রামে। এক কাপ চা পানের জন্য প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন লোকজন। ছুটির দিনগুলোতে ভিড় হয় বেশি। তখন এ মালাই চায়ের স্বাদ নিতে দোকানের সামনে অপেক্ষা করতে হয় ক্রেতাদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে মিরসরাই পৌরসভার পোস্ট অফিসের সামনে একটি চায়ের দোকান নিয়ে বসেছেন একরামুল হক রুবেল। দোকানে মালাই চায়ের পাশাপাশি অন্য চা ও বিস্কুট, চানাচুরসহ আরও বিভিন্ন আইটেম রয়েছে তার দোকানে। দোকানের বাইরে টেবিলে মালাই চায়ের অপেক্ষায় বসে রয়েছেন অনেক ক্রেতা। অনেকেই বসে চা পান করছেন। বেশ কয়েকজন বসার জায়গা না দাঁড়িয়ে চা পান করছেন। চা বানাতে ও মানুষের হাতে চায়ের কাপ পৌঁছানোর কাজে ব্যস্ত রুবেল ও তার দুই সহযোগী। এভাবেই চলছে তার নিত্যদিন।
একরামুল হক রুবেল মিরসরাই পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম মিরসরাই গ্রামের মৃত মো. আলীর ছেলে। ১০ বছর আগে দোকানটি দিয়েছেন। দুই বছর আগে বাবা মারা যাওয়ার পর এখন নিজেই দোকান সামলান রুবেল।
আরও পড়ুন: হারু ঘোষের রসগোল্লার সুনাম মানুষের মুখে মুখে
উপজেলার মিঠানালা থেকে আসা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন কাজে প্রায় সময় মিরসরাই সদরে আসা হয়। এখানে এলে রুবেলের দোকানে মালাই চা আমার পান করাই লাগবে। স্বাদটা দারুণ লাগে।’
স্থানীয় নাজমুল বলেন, ‘প্রতিদিন সন্ধ্যায় রুবেল ভাইয়ের দোকানে বসি। এখানে মালাই চা পান করা আমার রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাইরে থেকে বন্ধু-বান্ধব এলেও এখানে নিয়ে আসি। তারাও এ মালাই চা খুব পছন্দ করেন।’
জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে একরামুল হক রুবেল বলেন, ‘৪-৫ বছর আগে থেকে মালাই চা বিক্রি শুরু করি। প্রথমে প্রতিকাপ চা ১০ টাকায় বিক্রি করতাম। এখন জিনিসের দাম অনেক বেড়ে গেছে। তাই বর্তমানে প্রতিকাপ মালাই চা ৩০ টাকায় বিক্রি করি। মালাই ছাড়া আরও দুই আইটেমের চা বিক্রি করি আমি। পাশাপাশি কনফেকশনারি আইটেমও রয়েছে আমার দোকানে।’
আরও পড়ুন: স্বাদে সেরা নওগাঁর প্যারা সন্দেশ
রুবেল আরও বলেন, ‘আমি মালাই চায়ের মধ্যে হরলিক্স, মালটোভা, দুধ, চিনি, চা পাতা, কাজুবাদাম, কাট বাদাম, নারিকেল, গরুর দুধ ও ডিমের কুসুম ব্যবহার করি। যে একবার আমার দোকানে চা পান করে, সে বারবার এখানে আসে। চট্টগ্রাম, ফেনী, সীতাকুণ্ড, ফটিকছড়ি থেকে লোকজন চা পান করতে আসে। একজন আমাকে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে যেতে চাইছিল চা বিক্রির জন্য, আমি যাইনি।’
রুবেলের দোকানে প্রতিদিন দেড়শ কাপ মালাই চা বিক্রি হয়। শীতকালে বিক্রির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় দ্বিগুণ। এছাড়া পাউডার ও রং চা মিলিয়ে প্রতিদিন ৪০০-৪৫০ কাপ চা বিক্রি করেন রুবেল।
আরও পড়ুন: শেরপুরের শত বছরের ঐতিহ্য ছানার পায়েস
তরুণ ব্যবসায়ী পলাশ বলেন, ‘সময়-সুযোগ হলেই রুবেলের দোকানে চা পান করতে আসি। তার তৈরি মালাই চা আমার খুব ভালো লাগে। মনে হয় খাওয়ার পর কয়েক ঘণ্টা মুখে লেগে থাকে। এককথায় তার চা অসাধারণ।’
একটি বেসরকারি ব্যাংকের মিরসরাই শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক লুৎফুল্লাহিল মাজিদ বলেন, আমার ব্যাংকের পূর্ব পাশেই এতো সুস্বাদু চা পাওয়া যায় আমি জানতাম না। একদিন ওই দোকানে চা পান করার পর থেকে আমি নিয়মিত ক্রেতা হয়ে যাই।
মিরসরাই বাজার কমিটির প্রচার সম্পাদক নুর উদ্দিন বলেন, সবার কাছে রুবেলের চায়ের বেশ কদর রয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন চা পান করার জন্য এখানে ছুটে আসেন।
এসআর/জিকেএস