যমজ সন্তান প্রসব
নবজাতকদের চিনতে পারছেন না মানসিক ভারসাম্যহীন সেই নারী
যশোরের বাঘারপাড়ায় যমজ সন্তান জন্ম দেওয়া ভারসাম্যহীন নারীর ঠিকানা খুঁজছে প্রশাসন। আকলিমা নামে ওই নারীসহ (৩৫) ও দুই নবজাতক যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রসূতি মা ও দুই শিশুর দেখভাল করছেন। পাশাপাশি ওই নারীর নাম-পরিচয় বা ঠিকানা উদঘাটনেরও চেষ্টা চলছে।
যশোর জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিণ জাগো নিউজকে বলেন, বাঘারপাড়া থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন প্রসূতি মা ও দুই নবজাতককে যশোর হাসপাতালে পাঠানোর পর তাদের চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালের নার্স, আয়া, আনসার নারী সদস্য ছাড়াও কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী নারী শিশু দুটি ও মায়ের দেখাশোনা করছেন। আমি পুরো বিষয়টি তদারকি করছি। তবে মা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় সন্তানদের চিনতে পারছেন না এমনকি কাছেও রাখছেন না। বুকের দুধ খেতে দিচ্ছেন না।
তিনি আরও বলেন, দুটি শিশু ও মা-কে দেখাশোনা করতে সবাইকে অনেক পরিশ্রম করতে হচ্ছে। মা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ার তার স্বজনদের খুঁজে বের করা বা তার একটি ঠিকানা যেমন দরকার, তেমনি শিশু দুটিরও আশ্রয় দরকার। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
আরও পড়ুন: জমজ সন্তান প্রসব করলেন মানসিক ভারসাম্যহীন নারী
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুণ অর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন প্রসূতি ও দুই নবজাতক যশোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই নারীর ঠিকানা উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। তাদের ঠিকানা না পাওয়া গেলে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর তাদের দায়িত্ব নেবে। তবে তাদের পরবর্তী গন্তব্য নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত তারা হাসপাতালেই থাকবে।
রোববার সকালে বাঘারপাড়া উপজেলার ধলগ্রাম ইউনিয়নের নতুন গ্রামের জামিরুল ইসলামের খড়ের ঘরে ওই নারী সন্তান প্রসব করেন। পরে গৃহকর্তা জামিরুল নাম পরিচয়রহীন ওই নারীকে বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়।
জামিরুল জানান, রোববার ভোর ৬টার দিকে তার একটি ঘরে ভেজা কাপড়ে সন্তানসম্ভবা এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে দেখতে পান। তিনি নিজের বাড়ি বা তার নাম কি কিছুই বলছেন না। এ সময় তার স্ত্রীসহ আশপাশের আরও কয়েকজন তাকে সহযোগিতা করেন। সেখানে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন ওই নারী। শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় সকাল ১০টায় উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন জামিরুল। হাসপাতালে আনার পর নিজের নাম আকলিমা এবং স্বামীর নাম তারেক বলে জানান ওই নারী। কিন্তু বাড়ি কোথায় তা বলতে পারেনি।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার অরূপ জ্যোতি ঘোষ জাগো নিউজকে বলেন, সকাল ১০টায় নাম পরিচয়হীন এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে যমজ শিশুসহ হাসপাতালে আনেন কয়েকজন লোক। তাদের ভর্তি করে যথাযথ চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়।
বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসনে আরা তান্নি জাগো নিউজকে বলেন, রোববারই যমজ শিশু ও ভারসাম্যহীন নারীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তারা সুস্থ হয়ে উঠলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মিলন রহমান/এসজে/এএসএম