কন্যা সন্তানের জন্ম দিলো ধর্ষণের শিকার সেই শিশু

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নাটোর
প্রকাশিত: ০৫:২০ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে ধর্ষণের শিকার চতুর্থ শ্রেণির সেই ছাত্রী। শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গুরুদাসপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারের মাধ্যমে ওই নবজাতক ভূমিষ্ঠ হয়।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নারগিস তানজিমা ফেরদৌস ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোজাহিদুল ইসলাম জানান, স্কুলছাত্রীর বয়স কম হওয়ায় মা ও নবজাতককে বাঁচানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। অবশেষে সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। মা ও নবজাতক সুস্থ আছে।

অপরদিকে ধর্ষণের ঘটনা জানাজানির পর অভিযুক্ত জাহিদুল খাঁ-কে (৫০) গ্রেফতারের পর পুলিশে হস্তান্তর করেছে র‌্যাব। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।

আরও পড়ুন: ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী, আসামি জাহিদুল গ্রেফতার

ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর দাদি বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ অন্যের বাড়িতে কাজ করে কষ্টে সংসার চালাই। আমাদের কষ্টের কথা ভেবে অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস ১৫ দিন আগে ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। এগুলো দিয়েই ওর সেবা করেছি। এখন নানা চিন্তা আমাকে আঁকড়ে ধরেছে। কী করবো ভেবে পাচ্ছি না। নবজাতকটিকে যদি কেউ দত্তক নিতো তাহলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতাম।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সংসারে পারিবারিক কলহের কারণে শিশুটির বাবা-মার সংসার ভেঙে যায়। পরবর্তীতে বাবা ও মা অন্য জায়গায় বিয়ে করেন। এরপর থেকে শিশুটি তার নানির কাছে থাকতো। এলাকার এক দুঃসম্পর্কের নানা জাহিদুল খাঁ মাঝে মধ্য শিশুটিকে নিয়ে তার ভ্যানে স্কুলে আনা নেওয়া করতো। পাঁচ মাস পর শিশুটির শারীরিক পরিবর্তন দেখে স্বজনরা জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেয়নি শিশুটি। স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে চিকিৎসক অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি জানান। শিশুটি ধর্ষণের বিষয়টি স্বজনদের জানায়। ১৮ জুন তার দাদি বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। র‌্যাবের সদস্যরা ২৬ আগস্ট ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানার হেলেঞ্চা এলাকা থেকে জাহিদুল খাঁ-কে গ্রেফতার করেন।

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্রাবণী রায় জাগো নিউজকে বলেন, শিশুটিসহ ভুক্তভোগী পরিবার আমার কাছে আসেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অন্তঃসত্ত্বা শিশুটির দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে। অপ্রাপ্ত বয়সে মা হওয়ায় নানা আশঙ্কা থাকতে পারে। সে কথা চিন্তা করে সরকারিভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শিশুটির প্রসব করানোর সিদ্ধান্ত হয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

রেজাউল করিম রেজা/এসজে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।