লাইনে দাঁড়িয়ে সেবাপ্রার্থীরা, নাকডেকে ঘুমাচ্ছেন মেডিকেল কর্মকর্তা
নোয়াখালীর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সেবাপ্রার্থীরা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও ভেতরে চেয়ারে বসে নাকডেকে ঘুমাচ্ছেন আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম।
বুধবার (৩০ আগস্ট) দুপুর পৌনে ১২টায় জেনারেল হাসপাতালের চেম্বারে এমন চিত্র দেখা যায়। এতে চরম ক্ষুব্ধ হন সেবা নিতে আসা লোকজন। তারা এ ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন।
কবিরহাট উপজেলা থেকে সেবা নিতে আসা মোশাররফ হোসেন বলেন, আমি সকাল সাড়ে ১০টায় একটি কাজে আরএমওর অফিসে যাই। তিনি আমাকে বসিয়ে রেখে চেয়ারে ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর কয়েকজন সেবাপ্রার্থী চেঁচামেচি করলে তিনি অফিসের কোণায় গিয়ে অন্য চেয়ারে নাকডেকে ঘুমিয়ে পড়েন। দুপুর ১২টায় ঘুম ভাঙলে তিনি কাজ না করে আমাকে শনিবার আসতে বলেন।
সেবাপ্রার্থীদের একজন নাজমুন নাহার। তিনি দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েও আরএমও ডা. আবদুল আজিমের কক্ষে প্রবেশ করতে পারেননি। ঢুকতে চাইলে বারবার বলা হয় স্যার ব্যস্ত আছেন। তিনি বলেন, খবর নিয়ে জানতে পারলাম ভেতরে তিনি ঘুমাচ্ছেন। আমার প্রশ্ন জেলার একমাত্র জেনারেল হাসপাতালের আরএমও যদি দুপুরে অফিস কক্ষে ঘুমিয়ে থাকেন তবে সেবা দিবেন কখন।
সেবা না দিয়ে আরএমও আবদুল আজিমের ঘুমানোর কয়েকটি ছবি ও ভিডিও জাগো নিউজের কাছে পাঠিয়েছেন সেবাপ্রার্থীরা। তাদের দাবি, এ ঘটনায় তদন্ত করে আরএমওর বিরুদ্ধে যেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে আরএমও ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিমকে ফোন দিলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, কে বলেছে আমি ঘুমাচ্ছি, তাহলে ফোন ধরলাম কীভাবে?। ছবি-ভিডিওতে প্রমাণ আছে বলার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এ বিষয়ে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। তবে কেউ আমাকে বলেনি। আপনার কাছ থেকে শুনলাম। আমি ওনাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করবো এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবো।
এরআগে নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের এই আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তার (আরএমও) বিরুদ্ধে সনদের বিনিময়ে ১ লাখ টাকা ঘুস দাবির অভিযোগ ওঠে। ভুক্তভোগী অনন্যা বিনতে রহমান এ নিয়ে বাংলাদেশ সচিবালয়ের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগে অভিযোগ দিলে ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. রফিক-উস-ছালেহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
ইকবাল হোসেন মজনু/এসজে/এএসএম