সাবেক ধর্মমন্ত্রীর জানাজায় মানুষের ঢল
সাবেক ধর্মমন্ত্রী ও ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের জানাজায় লাখো মানুষ উপস্থিত হয়েছেন।
সোমবার (২৮ আগস্ট) বাদ আসর ময়মনসিংহ নগরীর আঞ্জুমান ঈদহগাহ মাঠে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে আকুয়া মড়ল পাড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
জানাজায় ঐতিহাসিক আঞ্জুমান ঈদগাহ ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়েও আশপাশের রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে শত শত নেতাকর্মী ও মুসল্লি জানাজায় অংশ নেন।
জানাজার আগে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, শফিউল আলম নাদেল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল ও অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের ছেলে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত।
রোববার (২৭ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে ময়মনসিংহের নেক্সাস কার্ডিয়াক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাবেক ধর্মমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। তিনি ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন। ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
পরিবার সূত্র জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। সম্প্রতি তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। সেখান থেকে ফিরে নিজ বাড়িতেই থাকতেন। রোববার দুপুরে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নেক্সাস হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
সোমবার সকালে মরদেহ আলমগীর মনসুর (মিন্টু) মেমোরিয়াল কলেজ প্রাঙ্গণে রাখা হয়। সেখানে বর্ষীয়ান এ রাজনীতিককে একনজর দেখতে হাজার নেতাকর্মী, ভক্ত ও শ্রেণিপেশার মানুষ ভিড় জমান। এসময় শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী ও সব শ্রেণিপেশার মানুষ। বিকেলে মরদেহ শিববাড়িতে দলীয় কার্যালয়ে আনা হলে সেখানে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করেন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা। এরপর মরদেহ নেওয়া হয় আঞ্জুমান ঈদগাহ ময়দানে। সেখানে গার্ড অব অনার শেষে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ১৯৪২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আবদুর রেজ্জাক এবং মায়ের নাম মেহেরুন্নেসা খাতুন।
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষক ও সফল সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেছেন সাবেক এ ধর্মমন্ত্রী। মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে তিনি সরাসরি অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধচলাকালীন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ঢালু যুব শিবিরের ইনচার্জ ছিলেন। তার নেতৃত্বে ১০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ হানাদারমুক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন।
মঞ্জুরুল ইসলাম/এসআর/এমএস