ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নড়াইল
প্রকাশিত: ০৫:১৮ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০২৩

বিলুপ্তপ্রায় জলজ প্রাণী ভোঁদড়। মাছ তাড়া করে শিকার করতে পছন্দ করে এরা। তাদের এ আচরণকে কাজে লাগিয়ে মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করছে নড়াইলের ৪০ জেলে পরিবার।

নড়াইল সদর উপজেলার কলোড়া ইউনিয়নের গোয়াইলবাড়ি গ্রামে অন্তত ২০০ জেলে পরিবারের বসবাস। এরমধ্যে ৪০টি পরিবারের পাশাপাশি উপজেলার রতডাঙ্গা ও পংকবিলা গ্রামের আরও কয়েকটি পরিবার এভাবে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছে।

জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভোঁদড় পানিতে মাছ শিকার করে খেতে পছন্দ করে। এজন্য তাদের ব্যবহার করে মাছ শিকারের কৌশল হিসেবে প্রতিটি জেলে নৌকার এক প্রান্তে খাঁচা রাখেন। মাছ ধরার সময় খাঁচার ডালা খুলে দেওয়া হয়। জেলেরা নৌকায় বাঁধা জাল নদীতে ফেলে ভোঁদড় ছেড়ে দেন। যাতে পালিয়ে না যায় এজন্য ভোঁদড়ের গলায় রশি বাঁধা থাকে। নৌকা নদীর তীরে আসতে থাকে আর ভোঁদড়ের তাড়া খেয়ে মাছ জেলেদের জালে এসে ধরা পড়ে। এভাবেই মাছ শিকার করে আসছেন তারা।

তারা আরও জানান, প্রতিটি ভোঁদড় বছরে ৭-৮ বার বাচ্চা দেয়। গড়ে ১০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে এরা। পূর্ণ বয়স্ক একটি ভোঁদড় ২০-৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।

jagonews24

গোয়াইলবাড়ি গ্রামের জেলে নিমাই বিশ্বাস বলেন, ‘ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকার করেই আমাদের জীবন চলছে। যে পরিমাণ মাছ পাই তা দিয়ে মোটামুটি চলে যায়। তবে নদীতে পানি বেশি থাকলে সুন্দরবন পর্যন্ত চলে যাই মাছ ধরতে।’

উন্নয়নকর্মী সাহেদ আলী শান্ত জাগো নিউজকে বলেন, আগের মতো তেমন আর ভোঁদড় দেখা যায় না। ২০১২ সালের ১২ জুলাই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিষয়ে একটি আইন পাস হয়েছে। এ আইন পাসের ১৮০ দিনের মধ্যে কোনো ব্যক্তির কাছে সংগৃহীত ও সংরক্ষিত কোনো বন্যপ্রাণী থাকলে সেগুলো নিবন্ধন করার বিধান রয়েছে। তবে এগুলো সংরক্ষণে তেমন জোর দেওয়া হয়নি।

নড়াইল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এইচ এম বদরুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ভোঁদড় দিয়ে জেলেদের মাছ ধরা পেশা হলেও বিলুপ্তপ্রায় এ প্রাণী সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। কিন্তু এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আলাদা কোনো নীতিমালা বা বরাদ্দ না থাকায় কোনো কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না।

হাফিজুুল নিলু/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।