ফের বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লালমনিরহাট
প্রকাশিত: ০৯:৫৯ এএম, ২৬ আগস্ট ২০২৩

অডিও শুনুন

ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি আবারও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। দুই হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। তলিয়ে গেছে আমন ক্ষেত।

শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচপ্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে তিস্তার পানি রেকর্ড হয়েছে ৫২ দশমিক ২২ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানির পরিমাপ কর্মচারী নুরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ভোর ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমা ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে উজান থেকে কী পরিমাণ পানি আসছে বলা যাচ্ছে না।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদীন ইসলাম তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিস্তায় পানি বাড়ায় নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। চরাঞ্চল মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই রান্না করতে না পেরে শুকনো খাবার খেয়ে আছেন।

আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই, নদীপাড়ে আতঙ্ক

এদিকে পানির নিচের তলিয়ে গেছে আমন ক্ষেত। পাশাপাশি গবাদি পশুপাখি নিয়ে বিপদে আছেন নদীপাড়ের মানুষ। অন্যদিকে পানির নিছে তলিয়ে পড়ছে মৌসুমি ফসল ধান ও শাক-সবজি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, সিঙ্গামারী ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা, কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার রাজপুর, খুনিয়াগাছ বাগডোরা, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে।

তিস্তাপাড়ের আয়নাল হক বলেন, ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় ঘর থেকে বের হতে পারছি না। গরু-ছাগল নিয়ে খুব কষ্টে আছি।

হাতীবান্ধা উপজেলার চর গড্ডিমারী আলিয়া বেগম বলেন, তিস্তার পানি বাড়ায় রান্না বন্ধ।

গড্ডিমারী ইউনিয়নের নিজ গড্ডিমারী গ্রামের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, শুক্রবার থেকে তিস্তার পানি বেড়ে পাঁচটি ওয়ার্ডে প্রবেশ করেছে। চরাঞ্চলের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। ঘরবাড়িতে পানি ঢোকায় অনেকেই বের হতে পারছেন না।

হাতীবান্ধার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, তিস্তা নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুই হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দি পরিবারগুলো ভোগান্তিতে পড়েছেন।

এর আগে জুলাইয়ে তিস্তার পানি বেড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। পানি নামার পর ভাঙন দেখা দেয়।

রবিউল হাসান/এসজে/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।