পরীক্ষা কক্ষে সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করলেন মেডিকেল টিমের সদস্য

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০৯:০৯ পিএম, ২২ আগস্ট ২০২৩

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নাগেশ্বরী মহিলা ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রের একটি কক্ষে এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষার্থীদের নিয়ে ফটোশেসন করেন মেডিকেল টিমের এক সদস্য। তোলেন সেলফিও। সেই সেলফিসহ আরও ৬টি ছবি নিজ ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন তিনি। দ্রুতই সেই ছবি ভাইরাল হয়। তবে ইতিবাচকভাবে নয়, নেতিবাচকভাবে। অভিভাবক, পরীক্ষার্থী ও সচেতন মহলের কেউই এটাকে ভালোভাবে নেননি। পরীক্ষা কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

মেডিকেল টিমের ওই সদস্যের নাম হাফিজুর রহমান। তিনি নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফার্মাসিস্ট ও বহির্বিভাগ ইনচার্জ। তিনি তার ফেসবুক প্রোফাইলে ছবিগুলো পোস্ট করে লেখেন- ‘এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের মেডিকেল টিমে আজ কিছু সময়।’

জানা যায়, মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) এইচএসসির ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষায় ওই কেন্দ্রের ৫নং কক্ষে একজন পরীক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে কেন্দ্র সচীব মেডিকেল টিমকে খবর দেন। এ সময় উপসহকারী মেডিকেল অফিসার মাইদুল ইসলাম ও ফার্মাসিস্ট হাফিজুর রহমান চিকিৎসা দিতে কেন্দ্রের ওই কক্ষে যান। উপসহকারী মেডিকেল অফিসার মাইদুল ইসলাম ওই শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা দিলেও ফার্মাসিস্ট হাফিজুর রহমান নিজের মোবাইল ফোনে সেলফি ও ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরীক্ষার্থী জানান, ফার্মাসিস্ট হাফিজুর রহমান বিভিন্ন আঙ্গিকে কমপক্ষে ১০-১২টি ছবি তোলেন। এতে তাদের পরীক্ষার মনযোগ নষ্ট হয়।

এ নিয়ে সচেতন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে পরীক্ষা কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা নিয়ে। আইন অনুযায়ী কেন্দ্রে দায়িত্বরত ব্যক্তি ও পরিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন বা কোনো প্রকার ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। সেখানে একজন মেডিকেল সদস্য কেন্দ্রে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ এবং পরীক্ষা কক্ষে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়ার দৃশ্যসহ সেলফি তুলে সেটি আবার সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন। এটিকে আইনের ব্যত্যয় ও কেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকাদের অবহেলার কারণ বলে মনে করছে সচেতন মহল।

উপসহকারী মেডিকেল অফিসার মাইদুল ইসলাম পরীক্ষা কেন্দ্রে এক পরীক্ষার্থীর চিকিৎসা দিতে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ সময় ফার্মাসিস্ট হাফিজুর রহমান আমার সঙ্গে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কখন সেলফি ও ছবি তুলেছেন সেটি আমার জানা নেই।

ফার্মাসিস্ট হাফিজুর রহমান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রের পরিবেশটা ভালো লেগেছিল তাই সেলফি তুলেছিলাম। কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে তোলা হয়নি। বিষয়টি আমার ভুল হয়েছে। আমি এরইমধ্যে ফেসবুক থেকে ছবি ডিলিট করেছি।

কেন্দ্র সচিব ও কলেজের অধ্যক্ষ নাসিমুল ইসলাম মন্ডল বলেন, আমার কেন্দ্রে এক পরীক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক্তার ডেকে আনা হয়। উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম এসে চিকিৎসা দিয়ে চলে যান। কিন্তু কে পরীক্ষা কক্ষে সেলফি তুলেছে তা আমার জানা নেই। তবে পরীক্ষা কেন্দ্রে ছবি তোলা নিষেধ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা জাহান বলেন, কোনো অবস্থাতে কেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে যাওয়ার নিয়ম নেই। সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ-খবর নিচ্ছি।

ফজলুল করিম ফারাজী/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।