তিন মামলায় ২ আসামির যাবজ্জীবন, একজনের ১০ বছর কারাদণ্ড
যশোরে মানবপাচার, হেরোইন ও সোনা চোরাচালান মামলায় তিন আসামির দুজনকে যাবজ্জীবন ও একজনকে ১৪ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৪ আগস্ট) পৃথক দুই আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পিপি আসাদুজ্জামান জাগো নিউজকে রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- শহরের শংকরপুর এলাকার ছোট বাবুর স্ত্রী প্রিয়া বেগম ওরফে আলেয়া বেগম ওরফে সুপ্রিয়া, একই এলাকার মৃত পঞ্চানন অধিকারীর ছেলে হারুলাল অধিকারী ও বেনাপোলের নামাজ গ্রামের আব্দুল জব্বার মিয়ার ছেলে ইসমাইল হোসেন।
আরও পড়ুন: স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ৩ জুলাই সকালে যশোরের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদর সার্কেলের সদস্যরা শহরের শংকরপুর বিহারী কলোনিতে অভিযান চালায়। এসময় ওই এলাকার মেহেদীর বাড়ির ভাড়াটিয়া ছোট বাবুর স্ত্রী সুপ্রিয়াকে ৮৩ গ্রাম হেরোইনসহ আটক করে। এই ঘটনার মামলায় সুপ্রিয়া ছাড়াও তার স্বামী ছোট বাবু এবং বাড়ির মালিক মেহেদী হাসানকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সোমবার যশোরের অতিরিক্ত দায়রা জজ তাজুল ইসলাম আসামি সুপ্রিয়া বেগমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি বিজিবির সদস্যরা শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছি প্রাইমারি স্কুলের সামনে থেকে ১০টি সোনার বারসহ বেনাপোলের নামাজ গ্রামের ইসমাইল হোসেনকে আটক করে। এই ঘটনার মামলাটি তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সোমবার বিচারক অতিরিক্ত দায়রা জজ তাজুল ইসলাম আসামি ইসমাইল হোসেনকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: যশোরে এক আসামির যাবজ্জীবন, অন্যজনের ১০ বছর কারাদণ্ড
এছাড়া ২০০২ সালের ১৫ জুলাই বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিজিবির নায়েক সুবেদার আবু সাইদ মুহিদুদ্দিনের নেতৃত্বে বড়আঁচড়া ব্রিজের কাছ থেকে অভিযান চালিয়ে শংকরপুর এলাকার হারুলাল অধিকারীকে ১৭০ গ্রাম হেরোইনসহ আটক করা হয়। এই ঘটনার মামলা তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে যশোর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সোমবার যশোরের বিশেষ দায়রা জজ (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক আসামি হারুলালকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিশেষ পিপি সাজ্জাদ মোস্তফা রাজা রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে হারুলাল পলাতক এবং অন্য দুজনকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
মিলন রহমান/জেএস/জিকেএস