হাত বদলেই এক ডিমে বাড়ছে ৩ টাকা
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে হাত বদলেই বাড়ছে ডিমের দাম। খামারিরা প্রতি পিস ডিম ১২ টাকায় বিক্রি করলেও দোকানি থেকে কিনতে হচ্ছে ১৫ টাকায়। এক হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। এতে প্রতি ডজনে দাম আসে ১৮০ টাকা। অথচ এক সপ্তাহ আগেও ডিমের দাম ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা ডজন।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহ ব্যবধানে বাজারে এক হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। যা গত সপ্তাহেও ছিল ৫৬ টাকা। এতে করে ডিমের বিক্রি আগের থেকে কমে গেছে বলে জানান একাধিক ব্যবসায়ী।
বড়দারোগাহাট বাজারের ডিমের আড়তদার নুরুল আমিন বলেন, আমরা আগে খামারি থেকে ৮ থেকে ৯ টাকায় একটি ডিম কিনেছি। গত এক সপ্তাহ ধরে সেই ডিম কিনতে হচ্ছে ১২ থেকে ১২ টাকা ৮০ পয়সায়। আমরা বিক্রি করছি ১৩ টাকা থেকে ১৩ টাকা ৫০ পয়সা। পরিবহন খরচ, শ্রমিকের বেতন রয়েছে। প্রতি ডিমে ১ টাকা লাভ না করলে ব্যবসা টিকবে না।
আরও পড়ুন: বেড়েছে উৎপাদন খরচ, এক ডিমের দামই ১৪ টাকা
উপজেলার দক্ষিণ মঘাদিয়া ঘোনা এলাকার খেয়ারহাটের দোকানি আমির হোসেন বলেন, পাইকার থেকে প্রতিপিস ডিম ১৩ টাকা ৫০ পয়সায় কিনেছি। ১৫ টাকা বিক্রি না করলে হবে না। অনেক ডিম নষ্ট হয়ে যায়।
বড়তাকিয়ায় বাজার করতে আসা স্কুল শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন বলেন, এমনিতে সব জিনিসের দাম বেশি। এর মধ্যে বেড়েছে ডিমের দাম। আমাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের চৌধুরী এগ্রোর মালিক সাইফুদ্দীন চৌধুরী মাসুদ বলেন, ডিমের দাম বাড়লে সবার মাথা ব্যথা শুরু হয়। সব জিনিসের দাম তো বেশি। যখন প্রচণ্ড গরম পড়ছে তখন খামারের অনেক মুরগি মারা গেছে। উৎপাদন কমে যাওয়ায় আমরা লোকসানে পড়েছি। এখন ডিমের দাম কিছুটা বেড়েছে, তাও কয়দিন থাকে বলা যাচ্ছে না। প্রতিপিস ডিমে উৎপাদন খরচ পড়ে প্রায় ১১ টাকা। আমরা পাইকারি বিক্রি করছি ১২ টাকা ৮০ পয়সা।
তিনি আরও বলেন, দফায় দফায় মুরগির খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছি না। শুধু চলতি বছরে প্রতিকেজি খাদ্যে দাম বেড়েছে ১৮ টাকা। ডিমের উৎপাদন খরচও অনেক বেড়ে গেছে।
আরও পড়ুন: ফেনীতে হাঁসের ডিমের হালি ৭২ টাকা, মুরগি ৬২
ওয়াহেদপুর এলাকার খামারি মোহাম্মদ সোহেল বলেন, মুরগির খাবারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। তারপরও গত কয়েক মাস ডিমের দাম কম ছিল। আমার খামারের ৪০০ মুরগি হিটস্ট্রোকে মারা গেছে। এখন হয়তো একটু লাভে ডিম বিক্রি করছি।
মিরসরাই উপজেলা পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক খামারি মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, উপজেলায় এক সময় দুই হাজারের বেশি খামারি ছিল। দিন দিন খামারির সংখ্যা কমছে। অনেক পুঁজি হারিয়ে এই ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। এখন ডিমের দাম বাড়ায় কিছুটা লাভবান হচ্ছে খামারিরা।
জেএস/এমএস