বন্যায় বান্দরবান গণগ্রন্থাগারের ৩০ হাজার বই নষ্ট
বান্দরবানে ভয়াবহ বন্যায় জ্ঞানের বাতিঘর নামে আখ্যায়িত বান্দরবান সরকারি গণগ্রন্থাগাররের ৩০ হাজারেরও বেশি বই ও ১৯৮৮ সাল থেকে বাঁধাই করা সংরক্ষিত পত্রিকা নষ্ট হয়ে গেছে।
রোববার (১৩ আগস্ট) বান্দরবান সরকারি গণগ্রন্থাগারের ইনচার্জ মাশৈথুই চাক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রোববার সকালে নয়াপাড়া এলাকার বান্দরবান সরকারি গণগ্রন্থাগারে গিয়ে দেখা যায়, বইসহ আসবাবপত্র বন্যার ময়লা পানি আর কাদামাটিতে একাকার হয়ে গেছে। পুরো গ্রন্থাগারে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে পানিতে ভেজা বই। কয়েকজনকর্মী গ্রন্থাগারের কাদামাটি ও নষ্ট বইগুলো পরিষ্কারের চেষ্টা করছেন। সবকিছু মিলে গণগ্রন্থাগারটি যেন এক ধ্বংসস্তূপ।
মাশৈথুই চাক জাগো নিউজকে বলেন, চলতি মাসের ২ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে বান্দরবানের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়। এতে গণগ্রন্থাগারও প্লাবিত হয়ে অন্তত ৩০ হাজারেরও বেশি বই বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। একতলা গ্রন্থাগার ভবনটির ভেতরে প্রায় ১০ ফুট উচ্চতায় পানি হওয়ায় কোনো বই রক্ষা করা যায়নি।
তিনি বলেন, গ্রন্থাগারে ১৯৮৮ সাল থেকে পত্রিকা বাঁধাই করে সংরক্ষণ করা ছিল। এছাড়া ইতিহাস, গবেষণা, গণিত, ব্রিটানিকা, পিডিয়া, রবীন্দ্র রচনাবলী, নজরুল রচনাবলী, উপন্যাসসহ ৩৮ হাজারেরও বেশি বই, বিভিন্ন ধরনের অফিস নথি, মুক্তিযুদ্ধের দলিল, স্বাধীনতাযুদ্ধের দলিল ছিল।
মাশৈথুই চাক আরও বলেন, ২০১৯ সালের বন্যায় কিছু বই নষ্ট হলেও পরবর্তীতে ৩০ হাজারেরও বেশি বই সংরক্ষিত ছিল। তবে এবারের বন্যায় সব বই ও দলিলপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া দুটি কম্পিউটার, একটি প্রজেক্টর, একটি স্ক্যানার, চারটি সিসি ক্যামেরা এবং বই রাখার আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে।
গণগ্রন্থাগারের নিয়মিত পাঠক সুফল বলেন, অবসর পেলে লাইব্রেরিতে গিয়ে ইতিহাস সম্পর্কিত বইসহ বিভিন্ন বই পড়তাম। নিয়মিত যাতায়াতের কারণে লাইব্রেরির সঙ্গে অদৃশ্য বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। বন্যায় বইগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার দৃশ্য খুবই কষ্ট দিচ্ছে। গণগ্রন্থাগারটি দ্রুত পাঠকদের জন্য উপযোগী করে তুলতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।
বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনি জাগো নিউজকে বলেন, জেলায় কেবল বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ছাড়া সব স্কুল কমবেশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত সঠিক ক্ষতি নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। দুই-একদিনের মধ্যে এই তথ্য পাওয়া যাবে।
নয়ন চক্রবর্তী/এমআরআর/এমএস