শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে স্থবির বিদ্যালয়

মো. আতিকুর রহমান মো. আতিকুর রহমান ঝালকাঠি
প্রকাশিত: ০৪:২১ পিএম, ১২ আগস্ট ২০২৩

ঝালকাঠির রাজাপুরের ১১২নং চর পাইলট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের অনিয়ম ও অন্তঃদ্বন্দ্বে স্থবির অবস্থা বিরাজ করছে। শিক্ষার পরিবেশ না থাকায় সেখানে শিক্ষার্থী উপস্থিতি যেমন কম তেমনি অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের অন্যত্র ভর্তি করাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সরেজমিনে স্কুলটিতে গিয়ে দেখা যায়, দুটি ক্লাসরুমে মাত্র ৬ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত রয়েছে। পঞ্চম শ্রেণি শিক্ষার্থীশূন্য। ৪ জন শিক্ষকের মধ্যে প্রধান শিক্ষকসহ দুজনই অনুপস্থিত। সহকারী শিক্ষক শেফালি মমতাজ ও নুপুর আক্তারকে ক্লাসে পাওয়া গেলেও প্রধান শিক্ষক প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের মিটিংয়ে এবং রিনা বেগম ছুটিতে বলে জানা যায়।

স্কুল সূত্র জানায়, স্কুলে মোট ২৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তার মধ্যে প্রাক প্রাথমিকে ২ জন, প্রথম শ্রেণিতে ৭ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৪ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ৭ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ৪ জন ও পঞ্চম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা ২ জন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক ও স্থানীয়রা জানান, প্রধান শিক্ষক মাসের মধ্যে ১৩-১৫ দিন স্কুলে সঠিকভাবে আসেন না। কিন্তু নিয়মিত স্বাক্ষর দিয়ে রাখেন। তার অনুসারী শিক্ষকরাও সঠিকভাবে পাঠদান করান না। এ কারণে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এখানে শিক্ষার মানও নেই।

এছাড়া শিক্ষকদের মধ্যে পারিবারিক জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব ও ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে বিরোধে স্কুলে স্থবিরতা বিরাজ করছে। এ কারণে অভিভাবকরাও এ বিদ্যালয়ে তাদের সন্তানদের শিক্ষাগ্রহণে আগ্রহ হারিয়ে অন্য স্কুলে ভর্তি করান।

দাতা সদস্য আব্দুল হালিম বিশ্বাস ও ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য নুরুজ্জামান জানান, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে শিক্ষার পরিবেশ নেই। এ কারণে শিক্ষার মানও নেই। তাই অভিভাবকরাও শিক্ষার্থীদের এ স্কুলে ভর্তি করেন না। এসব পরিস্থিতি নিরসনের জন্য শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।

সাবেক সভাপতি মতিন জমাদ্দার জানান, শিক্ষকদের আচরণ ও আন্তরিকতার অভাবে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি সন্তোষজনক না। শিক্ষার্থী নেই, সঠিকভাবে পাঠদানও হয় না।

তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাসিমা আক্তার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি সঠিকভাবেই স্কুলে যান এবং থাকেন। মিটিং ও অফিসের কাজে মাঝে মধ্যে রাজাপুরে থাকতে হয়। এছাড়া প্রত্যন্ত চর এলাকা হওয়ায় শিক্ষার্থী কম।

স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কবির হোসেন জানান, সার্বিক পরিস্থিতি নিরসনে সভা আহ্বান করা হয়েছে। সভায় প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অভিযোগ রয়েছে ওই বিদ্যালয় তদারকির দায়িত্বে থাকা শিক্ষা অফিসার প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগসাজসে উৎকোচের বিনিময়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।

তবে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আরজুদা বেগম অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং শিক্ষক উপস্থিতির বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।