উদ্বোধনের আগেই ধসে গেলো সেতুর সংযোগ সড়ক
উদ্বোধনের আগেই ধসে পড়েছে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সরমহল গ্রামের সিংহবাড়ির খালে ওপর নির্মিত সেতুর সংযোগ (অ্যাপ্রোচ) সড়ক। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে এলজিইডি। সম্প্রতি সড়কটির পাশ থেকে ধসে যায়।
স্থানীয়দের দাবি, কাজের শুরু থেকেই সংযোগ সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ করে আসছিলেন তারা। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অভিযোগ অস্বীকার করে ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগকে’ দায়ী করেছে।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু ও দুই পাশে ১০৪ মিটার সংযোগ সড়কের কাজের জন্য খরচ হয়েছে তিন কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে কুশঙ্গল ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম সংযুক্ত হবে।
আরও পড়ুন: ২ যুগ পর ঘুম ভাঙলো পাকশী রেল কর্তাদের
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়ক বৃষ্টিতে ধসে গেছে। সেতুর গোড়ায় বাঁধাই করা ব্লক সরে গেছে। সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম দিকের সংযোগের বালু সরে গিয়ে কয়েকটি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে ব্লক। ঠিকাদারের লোকজন ফাটল ও ধসে পড়া অংশ পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজ শুরুর দিকে ধীরগতি ছিল। কিন্তু যথাসময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করার জন্য শেষের দিকে এসে তড়িঘড়ি করে সম্পন্ন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সরমহল গ্রামের বাসিন্দা কালাম সরদার, রুহুল আমীন হাওলাদার ও তুহিন সরদার বলেন, সড়ক ও সেতুটির নির্মাণ শুরু হওয়ার পর এলাকায় মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিলেন। তবে নিম্নমানের কাজ দেখে হতাশা হয়েছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দরপত্রের মাধ্যমে মেসার্স এম এম এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সে কাজটি পান জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আল-আমিন। পরবর্তী সময়ে তিনি বিক্রি করেন মো. নান্নু, মনির হোসেন, রিয়াজ ও কামাল হোসেন নামের চার ব্যক্তির কাছে। কাজের নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেলে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছর সময় বাড়ানো হয়।
আরও পড়ুন: ঝকঝকে সেতুতে উঠতে লাগে মই
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একজন মনির হোসেন বলেন, ‘রড, সিমেন্ট, পাথরসহ নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়েছে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ভারী বর্ষণে সংযোগ সড়কের যে ক্ষতি হয়েছে, তা সংস্কার করা হবে।’
কুশঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন সিকদার বলেন, অগ্রাধিকার ভিক্তিতে নির্মাণাধীন সেতুটি আগামী সেপ্টেম্বর মাসে উদ্বোধনের কথা ছিল। এমন সময় সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে পড়ার খবর পেয়ে আমি এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি ঘটনাস্থলে এসে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
এ বিষয়ে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী ইকবাল কবীর বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ঠিকাদার দ্রুত সংস্কার করে দেবেন। নিয়ম অনুযায়ী কাজ না করলে বিল পাবেন না।
আতিকুর রহমান/এসআর/এমএস