ফুলগাজী-পরশুরামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফেনী
প্রকাশিত: ০১:২৩ পিএম, ১০ আগস্ট ২০২৩

ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলা। এখন উজানের পানি নামতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তবে এখনও দুই উপজেলার ২০টি গ্রামের লোকালয়ে পানি রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে মুহুরী নদীতে পানি বিপৎসীমার ২০৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই কিলোমিটার এখনও পানির নিচে তলিয়ে আছে। একই সঙ্গে পানি বন্দী হয়ে আছেন ৫০ হাজার মানুষ।

এর আগে (৭ আগস্ট) সোমবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মুহুরী নদীর ফুলগাজীর দুটি স্থানে ও দুপুরে পরশুরামের একটি স্থানে বাঁধ ভেঙে দুই উপজেলার ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়।

আরও পড়ুন: নদীগর্ভে মায়ের কবর, হারিয়ে যেতে পারে মাথাগোঁজার ঠাঁইও

এছাড়া টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার অন্তত ৮২৫ হেক্টর আমনের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। বাঁধভাঙা পানিতে অন্তত তিন শতাধিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মৎস্য চাষীদের অবকাঠামো।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দ্রুত পানি না নামলে এসব জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়াও জেলায় ১০ হেক্টর আমনের বীজতলা ও ১৫ হেক্টর সবজি ক্ষেত পানিতে ডুবে আছে।

পরশুরামের মৎস্য চাষী আকবর হোসেন বলেন, আমার চাষের তিনটি পুকুরে অন্তত ১০ লাখ টাকার পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়া মাছ ছিল। বাঁধভাঙা পানিতে পুকুরের সব মাছ ভেসে গেছে। কিভাবে খাদ্যের ডিলারদের টাকা পরিশোধ করবো জানি না। চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছি।

আরও পড়ুন: ‘সন্তানদের খাবার দিতে পারছি না, গবাদিপশুগুলোও অভুক্ত’

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া ও পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা শমসাদ বেগম বলেন, দুই উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজারেও বেশি মানুষ পানিবন্দি। বানভাসি মানুষদের জন্য শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে।

ফেনী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. একরাম উদ্দিন বলেন, পাহাড়ি ঢলে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার অন্তত ৮২৫ হেক্টর আমনের জমি পানিতে তলিয়ে আছে। ১০ হেক্টর আমন বীজতলা ও ১৫ হেক্টর সবজি ক্ষেতও পানিতে নিমজ্জিত।

ফেনী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, বন্যার পানিতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় ৩৭৫টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে কোনো ধরনের সহায়তা পেলে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: বন্ধ হয় না ভাঙন, জলে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা

ফেনীস্থ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদ শাহরিয়ার জানান, উজানে বৃষ্টির কারণে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। উজানে বৃষ্টি বন্ধ হলে প্লাবনও বন্ধ হয়ে যাবে। পানির অতি গতির কারণে বাঁধগুলোতে সংস্কার কাজ করা যাচ্ছে না। পানির গতি কমলে বাঁধের ভাঙা তিন জায়গায় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আবদুল্লাহ আল-মামুন/জেএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।