নদী ভাঙনে ছোট হচ্ছে নলছিটি পৌর এলাকা, পরিত্যক্ত ভবনও অনেক
সুগন্ধা নদীর ভাঙনের কবলে ছোট হয়ে গেছে ঝালকাঠির নলছিটি পৌর এলাকা। পৌরসভার ৫, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে অব্যাহত আছে ভাঙন। এতে কমে যাচ্ছে ব্যবহারযোগ্য ভূমির পরিমাণ। এরইমাঝে পৌর এলাকার বড় একটা অংশজুড়ে আছে পরিত্যক্ত বিভিন্ন সরকারি ভবন। যেগুলো কোনো একসময় ব্যবহার করা হলেও এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৯ সালে নলছিটিতে সরকারিভাবে একটি শিশুপার্ক করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও পৌর এলাকায় সুবিধামতো জায়গার সংকুলান না হওয়ায় সেই প্রকল্প বাতিল করা হয়। অথচ সরকারি একটি শিশুপার্ক নির্মাণ উপজেলাবাসীর প্রাণের দাবি।
পৌর এলাকার বাসিন্দা মশিউর রহমান বলেন, নলছিটিতে সরকারি পুরোনো অনেক ভবন আছে যেগুলো এখন আর ব্যবহার হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে এসব ভবন পড়ে থাকায় ভবনের আশপাশে পানি জমে এখন এডিস মশার উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এসব ভবন ভেঙে ভূমি উদ্ধার করে নলছিটিতে যেসব প্রতিষ্ঠান নেই সেগুলো এসব জায়গায় করা যেতে পারে। বিশেষ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিত্যক্ত ভবনগুলো ভেঙে ফেললে সেখানে যে পরিমাণ জায়গা বের হবে তাতে একটি পার্ক করার জন্য যথেষ্ট।
নলছিটি উপজেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বললেও তারা জানাতে পারেনি পৌর এলাকায় কী পরিমাণ পরিত্যক্ত ভবন আছে এবং তাতে কতটুকু ভূমি অব্যবহৃত পড়ে আছে। তাদের কাছে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই।
তবে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার পৌর এলাকার পুরাতন কারাগার ভবন, মালিপুর এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিত্যক্ত ভবন, উপজেলা পরিষদ ভবন সংলগ্ন পুরোনো সরকারি কোয়ার্টার, মুক্তিযোদ্ধা অফিস সংলগ্ন এরশাদ ভবন নামে পরিচিত পুরোনো ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বেশকিছু পরিত্যক্ত সরকারি ভবন। তার মধ্যে একসময় কয়েদি রাখার জন্য পুরাতন উপজেলা কারাগারের পরিত্যক্ত অব্যবহৃত ভবন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিত্যক্ত ভবনগুলো একটি বড় অংশ দখল করে আছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আলম বলেন, নলছিটির বিভিন্ন সরকারি পরিত্যক্ত ভবনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা অফিস সংলগ্ন ভবনের অনেক লোহার মালামাল চুরি হয়ে গেছে। উন্মুক্ত এসব জায়গায় রাতে মাদকসেবীদের আড্ডা জমে। এছাড়া এখানের কিছু জায়গা বেদখল হয়ে আছে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা গায়ের জোরে সড়কের পাশের কিছু অংশে অবৈধভাবে দখল করে দোকান তুলে ভাড়া দিচ্ছেন। প্রশাসনের উচিত এসব ভবন ভেঙে সরকারি জমি উদ্ধার করে নতুন প্রয়োজনীয় ভবন তৈরি করা।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জান্নাত আরা নাহিদ বলেন, এই ভবনগুলো ভেঙে নতুন ভবন বা প্রতিষ্ঠান করে ভূমির যথাযথ ব্যবহার করার পরিকল্পনা উপজেলা প্রশাসনের আছে। কিন্তু এখানে কিছু আইনি বিষয়ও আছে। যেগুলো মেনে আমাদের কাজ করতে হবে। কিছু ভূমি আছে যা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে আবার কিছু ভূমি আছে যেগুলো প্রতিষ্ঠানের নামে। তাই তাদের সবার সঙ্গে সমন্বয় করে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আর কেউ যদি এসব জায়গায় দখলের চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমআরআর/এমএস