গ্রাহকের ৫ কোটি টাকা নিয়ে উধাও এনজিও

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ
প্রকাশিত: ০৪:১৯ পিএম, ৩১ জুলাই ২০২৩

নওগাঁর মহাদেবপুরে ‘ব্যতিক্রমী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) গ্রাহকের প্রায় পাঁচ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে। এতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ১৩৯ জন গ্রাহক প্রতারিত হয়েছেন। ভবিষ্যতের জন্য জমানো টাকা দিয়ে প্রতারিত হওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছেন এসব গ্রাহকরা।

টাকা ফেরত পেতে সোমবার (৩১ জুলাই) দুপুরে উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংক সংলগ্ন ওই এনজিও কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।

জানা গেছে, ২০১৯ সালে উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংক সংলগ্ন এনজিওর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মেহেদী হাসানসহ কয়েকজন মিলে ‘ব্যতিক্রম ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি’ নামে নামে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করেন। তার বাড়ির একটি অংশে এনজিওর কার্যক্রম পরিচালনা করতেন তিনি। এরপর তারা গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে প্রলুব্ধ করেন। লাভের আশায় ওই এনজিওতে লাখ লাখ টাকা জমা রাখেন গ্রামের সহজ-সরল মানুষ। কিন্তু ২ মাস আগে হঠাৎ করে এনজিওর অফিস বন্ধ করে উধাও হয়ে যান ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মেহেদী হাসান। সঙ্গে নিয়ে যান ১৩৯ জন গ্রাহকের প্রায় ৫ কোটি টাকা।

ঘটনার পর থেকে ওই বাড়িতে আর কোনো সদস্য থাকে না। ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। তাই কষ্টের অর্জিত টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।

ভুক্তভোগী বিধবা দেলোয়ারা বেগম বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার আগে ২২ লাখ টাকা দুই ছেলেকে দেয়। ওই টাকার ওপর আমার সংসার ও ছেলেদের লেখাপড়া চলতো। আমার ছেলেদের বিভিন্ন লোভ দেখানো হলে ২২ লাখ টাকা তাদের এনজিওতে রাখে। জমানো টাকার কিছুদিন লাভ দেওয়া হয়। টাকা নিয়ে তারা পালিয়েছে। প্রতিদিন তাদের খোঁজে অফিসে আসি। কিন্তু তাদের কোনো খোঁজ পাই না। এখন সংসার চালানো আমাদের কষ্টকর হয়ে পড়েছে। আমি আমার টাকা ফেরত চাই ও মেহেদী হাসানের শাস্তির দাবি জানাই।

আরেক ভুক্তভোগী নুরুল ইসলাম বলেন, চালকলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। রোজগারের একটি অংশ সংসারে খরচের পর কয়েক মাস আগে ৫৩ হাজার টাকা এনজিওতে জমা রেখেছিলাম। সেখান থেকে আমি কোনো লাভ পাইনি। সেই টাকা নিয়েও প্রতারক মেহেদী হাসান পালিয়েছে।

ওই এনজিওর কর্মচারি বেলাল হোসেন বলেন, যখন তাদের প্রতারণা বুঝতে পারি তখন তারা আমাকে চাকরি থেকে বাদ দিয়ে দেয়। এরপর বিভিন্নভাবে প্রতারণা করে অসহায়-গরিব মানুষের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মেহেদী হাসান।

এ বিষয়ে ‘ব্যতিক্রমী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি’ এনজিওর এমডি মেহেদী হাসানের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভি করেননি।

মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন বলেন, বিষয়টি শুনেছি। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা আমার কাছে আসলে তাদেরকে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি।

আব্বাস আলী/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।