৪৬ বছর বয়সে এসএসসি পাস করলেন রহিমা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০১:৪৯ পিএম, ৩০ জুলাই ২০২৩

৩৬ বছর বয়সে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন কুড়িগ্রামের মোছা. রহিমা বেগম। শুধু তাই নয় সেই পরীক্ষায় জিপিএ ৩.৬০ পেয়ে পাস করে দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছেন তিনি। কুড়িগ্রাম কাঁঠাল বাড়ি মহিউস সুন্না মহিলা দাখিল মাদরাসা থেকে তিনি দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।

জানা গেছে, রহিমা বেগম পেশায় একজন ভাতাপ্রাপ্ত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। তিনি বর্তমানে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ কর্মরত আছেন। তার স্বামী মো. আব্দুল জলিল সরকার মজনু কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার খলিলগঞ্জ নাজিরা পাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তিনি পড়াশোনা করতে পারেননি। পরে নিজের অদম্য ইচ্ছে শক্তি ও পরিবারের অনুপ্রেরণায় তিনি এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। তার সংসারে এক মেয়ে ও এক ছেলে আছে। ছেলে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে মাস্টার্স শেষ বর্ষে পড়াশোনা করছেন। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। মেয়ের ঘরে এক ছেলে আছে। দীর্ঘ বছর পর নাতিকে নিয়ে স্কুল যাওয়া আসা করতে গিয়ে তিনি আবারও পড়াশোনায় উজ্জীবিত হন। এরপরই তিনি কুড়িগ্রাম কাঁঠাল বাড়ি মহিউস সুন্না মহিলা মাদরাসায় ভর্তি হয়ে যান। সেখান থেকেই দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেন এবং ৩.৬০ জিপিএ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এ বয়সে পাস করায় পরিবার আত্মীয় স্বজন ও সহকর্মীদের অভিনন্দন ও ভালোবাসায় মুগ্ধ রহিমা বেগম।

আরও পড়ুন: পাহাড়ের দুর্গমতা আটকাতে পারেনি নয়নকে, এসএসসিতে পেলো জিপিএ ৫

রহিমা বেগম বলেন, লোকলজ্জা আর বয়সের ভয় না করে আমি পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। চতুর্থ শ্রেণির পর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ বছর পর আবার পড়াশোনা শুরু করি। আলহামদুলিল্লাহ এ বছর এসএসসি পাস করলাম। আমার পড়াশোনা করার ব্যাপারে আমার ছেলে-মেয়ে ও সহকর্মীরা উৎসাহ দিত। আমার ইচ্ছে পড়াশোনা চালিয়ে যাবো।

রহিমা বেগমের মেয়ে মজিদা আক্তার পপি বলেন, মা এই বয়সে এসে সংসার ও চাকরি করার পরও পরীক্ষায় পাস করবে জানতাম না। আমার মায়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ মির্জা মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, রহিমা বেগম আমার কলেজের একজন কর্মচারী। তিনি দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে মাদারাসায় দাখিল শ্রেণিতে ভর্তি হন। এবছর এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৩.৬০ অর্জন করেছেন। বয়স বা কোনো বাধাই তাকে আটকাতে পারেনি। পড়াশোনায় মাঝপথে কিংবা শুরুতে থেমে যাওয়া অন্য সব নারী/পুরুষদের জন্য রহিমা একটি প্রেরণার উৎস। যেকোনো বয়সেই যে শিক্ষা অর্জন করা যায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রহিমা।

তিনি আরও বলেন, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে রহিমাকে অভিনন্দন এবং সে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে ভর্তি হতে চাইলে তাকে সহযোগিতা করা হবে।

ফজলুল করিম ফারাজী/জেএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।