আড়িয়াল খাঁ নদে চোখ রাঙাচ্ছে ভাঙন, আতঙ্কে পাড়বাসী

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী আয়শা সিদ্দিকা আকাশী , জেলা প্রতিনিধি মাদারীপুর
প্রকাশিত: ০৬:৩৯ পিএম, ২১ জুলাই ২০২৩

মাদারীপুর সদরে আড়িয়াল খাঁ নদে ভাঙন দেখা দিয়েছে। দুপাড়ে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে আছে। এতে আতঙ্কে আছেন নদীপাড়ের ছয় শতাধিক মানুষ। ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধের দাবি জানিয়েছেন তারা।

জানা যায়, বর্ষার শুরু থেকেই সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের পূর্ব মহিষেচর এলাকার আচমত আলী খান ব্রিজ সংলগ্ন নদীতে ভাঙন দেখা দেয়। দক্ষিণ-পূর্ব মহিষেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ব্যাপারীবাড়ি মসজিদসহ নানা স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, গত বছর ১০০ ফুট বাঁধ ও কিছু জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন রক্ষা হলেও বর্তমানে তা পর্যাপ্ত নয়। প্রতিবছরের মতো এবছরও আবার ভাঙন দেখা দেওয়ায় জরুরিভাবে জিও ব্যাগ ফেলা দরকার হয়ে পড়েছে। স্থায়ী বাঁধ হলে কিছুটা হলেও নিরাপদে বসবাস করা যাবে।

আমির হোসেন মাতুব্বর নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমি এখানকার বাসিন্দা। এখানে একটি মসজিদ আছে। এটি রক্ষা করা দরকার। এরই মধ্যে মসজিদের ওজুখানা, টয়লেট নদীগর্ভে চলে গেছে। তাই এখানে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ জরুরি।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহেরুর বিবি বলেন, আমরা এখানে স্থায়ী একটি বাঁধ চাই। নদীতে যদি আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে যায়, তাহলে মাথাগোজার ঠাঁইও থাকবে না।

স্থানীয় রাশিদা আক্তার বলেন, প্রতিবছর নদীতে ভাঙন হয়। তাই এখানে একটি স্থায়ী বাঁধ চাই। যাতে আমরা একটু চিন্তামুক্তভাবে বসবাস করতে পারি।

স্থানীয় আ. আজিজ বলেন, গত বছর এখানে ১০০ ফুটের বাঁধ হয়েছিল। কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়, এ বাঁধের দুপাশে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হোক।

মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. শাহজালাল বলেন, পাঁচ বছর হয়েছে এ মসজিদে এসেছি। এখানকার মানুষ দিনমজুর। তাদের তেমন কোনো জায়গা নেই। এ জায়গা ভেঙে গেলে তাদের আর থাকার জায়গা থাকবে না। তাই এখানে স্থায়ী বাঁধ জরুরি।

স্থানীয় বাসিন্দা মালয়েশিয়া প্রবাসী মোহাম্মদ জয়নাল বলেন, প্রতিবছরই একটু একটু করে নদী ভাঙতে ভাঙতে এখন একেবারেই সামনে চলে এসেছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না হলে এখানকার মানুষদের যে কোনো সময় বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হবে। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নাসিরউদ্দিন মোল্যা টুকু জাগো নিউজকে বলেন, ভাঙনের মূল কারণ হচ্ছে ড্রেজার মেশিন। অপরিকল্পিতভাবে নদী থেকে বালু তোলার কারণেই এ অবস্থা। আমি সরেজমিনে দেখবো। এরপর কী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সেভাবেই কাজ করবো।

মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সানাউল কাদের খান জাগো নিউকে বলেন, এরই মধ্যে আমরা ভাঙনের খবর পেয়েছি। আগামী সপ্তাহে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর জরুরি কোনো বরাদ্দ এলেই প্রাথমিকভাবে জিও ব্যাগ ফেলা হবে। যাতে করে ভাঙনরোধ করা যায়।

এসজে/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।