সম্পত্তির জন্য ভাইকে জীবন্ত পুঁতে হত্যা
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে ভাইকে জীবন্ত পুঁতে হত্যার এক বছর পর আলমগীর হোসেন (৪৫) নামে এক ব্যক্তির কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের পশ্চিম রামদেব গ্রাম থেকে কঙ্কালটি উদ্ধার করে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ। নিহত আলমগীর হোসেন কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের সিরাজুল মার্কেট এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আলমগীরের মায়ের জমি জবর-দখল করে ভোগ করছিলেন তার সৎভাই খেলান উদ্দিন ও আব্দুস সাত্তার। যা নিয়ে ভাইদের মাঝে মনোমালিন্য চলছিল। এরই জের ধরে আলমগীরকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন খেলান উদ্দিন ও আব্দুস সাত্তার।
পরিকল্পনামতো ২০২২ সালের ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় আলমগীরকে কৌশলে ডেকে নিয়ে আদিতমারী উপজেলার পশ্চিম রামদেব গ্রামে নিয়ে আসেন খেলান, আব্দুস সাত্তার এবং সাত্তারের ভায়রা (শ্যালিকার স্বামী) পাবনার রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাশেদ ড্রাইভার। এরপর তাকে পশ্চিম রামদেব গ্রামের আশরাফ আলী চোর ও সেকেন্দার আলীর হাতে ন্যস্ত করেন তারা। সেখানে আলমগীরের কোল্ডড্রিংসে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে অচেতন করা হয়। আলমগীর ঘুমিয়ে পড়লে আশরাফ চোর ও সেকেন্দার আলীর বাড়ির পেছনে একটি বাঁশঝাড়ের গর্তে তাকে জীবন্ত পুঁতে ফেলে চক্রটি।
এদিকে আলমগীরের কোনো খোঁজ না পেয়ে তার পরিবার কালীগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডায়রি করেন। এর দুই মাস পর একে একে খেলান উদ্দিন ও আব্দুস সাত্তার মারা যান।
সম্প্রতি সাত্তারের ভায়রা পাবনার রাশেদুল ড্রাইভার নিখোঁজ আলমগীরের পরিবারকে ফোন করে হত্যার ঘটনাটি প্রকাশ করেন। অবশেষে এ ঘটনায় নিহত আলমগীরের আপন ভাই সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে লালমনিরহাট আদালতে মামলা করেন।
মামলাটির তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামান পাবনার রাশেদুল ড্রাইভার এবং আদিতমারীর রামদেবের আশরাফ চোর ও সেকেন্দার আলীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ঘটনার সত্যতা শিকার করেন।
আটক রাশেদ ড্রাইভারের দেওয়া তথ্যমতে বৃহস্পতিবার দুপুরে রামদেব গ্রামের বাঁশঝাড়ের গর্ত খুঁড়ে আলমগীর হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ।
আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক জাগো নিউজকে বলেন, আটকদের দেওয়া তথ্যমতে গর্ত খুঁড়ে মৃত ব্যক্তির কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের কঙ্কাল লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
রবিউল হাসান/এফএ/জেআইএম