বিয়ের ৭ মাসেই লাশ হলেন বিথি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ০৭:২০ পিএম, ১৮ জুলাই ২০২৩

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার সহদেবপুর ইউনিয়নের আকুয়া গ্রামে এক প্রবাসীর স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৭ জুলাই) রাতে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি মীমাংসার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা চালানোয় এটি মৃত্যু নাকি হত্যা সেটি নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।

নিহতের পরিবারের দাবি, বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে সোনার গহনা দেওয়া কথা ছিল। দিতে দেরি হওয়ায় দুধে বিষ দিয়ে তাদের মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত গৃহবধূ বিথি আক্তার উপজেলার লুহুরিয়া গ্রামের মনিরুজ্জামান বাজেলের মেয়ে।

জানা যায়, ৭ মাস আগে বিথি আক্তারের সঙ্গে ওই উপজেলার সহদেবপুর ইউনিয়নের আকুয়া গ্রামের আব্দুল্লাহ আনসারীর বড় ছেলে প্রবাসী সুমন আনসারীর বিয়ে হয়। বিয়ের ৩ মাস পর স্বামী সুমন প্রবাসে চলে যান। এরপর থেকেই সৎ শাশুড়ি শাহিনা আক্তার যৌতুকের জন্য নানা অত্যাচার ও চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন তার উপর।

রোববার দুপুরে বিথি শ্বশুরকে হাট থেকে শশা কিনে আনতে বলেন। ছেলের বউয়ের কথামতো শ্বশুর শশা কিনে আনলে শাশুড়ি ওই শশা বাইরে ফেলে দেন এবং স্বামীকে বকাবকি করতে থাকেন। ছেলের বউ শ্বশুরের পক্ষ নিয়ে কথা বললে শাশুড়ির মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সবাই রাতের খাবার শেষ করার পর শাশুড়ি বিথিকে এক গ্লাস দুধ খেতে দেন। দুধ খেয়ে তিনি ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।

সোমবার সকালে ঘুম থেকে না ওঠায় সবাই ডাকাডাকি করেন। না উঠলে তার বাবার বাড়িতে ফোন দেন। ফোন পেয়ে তার বাবাসহ বাড়ির লোকজন এসে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে। পরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঢাকায় নেওয়ার পথে বিথির মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় ওই রাতেই নিহতের বাবার সঙ্গে মীমাংসার জন্য ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সহিদুল ইসলাম, হযরত আলী, আতোয়ার রহমান, মাহমুদুল হক, মিন্টু মিয়া ও ওহাব আলীসহ একাধিক মাতব্বর মিলে দফায়-দফায় বৈঠক করেন। মীমাংসা না হওয়ায় এক পর্যায়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহতের দাদি হোসনেয়ারা ও ফুপু মর্জিনা আক্তার বলেন, বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে সোনার গহনা দেওয়ার কথা ছিল। সেই গহনা দিতে একটু সময় লাগায় তার সৎ শাশুড়ি দুধের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাকে মেরে ফেলেছে।

ইউপি সদস্য সহিদুল ইসলাম দফায়-দফায় বৈঠকের কথা স্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান জানান, খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আরিফ উর রহমান টগর/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।