দুই দোকানে মাসে ৬ লাখ টাকার চা বিক্রি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ০৬:১৯ পিএম, ১৭ জুলাই ২০২৩

চা পান করতে ভালোবাসেন না এমন মানুষ খুব কম। সিলেটের সাতরং চা কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজিতার মতো বিশেষ চা পান করতে প্রতিদিন মানুষ ভিড় করেন। তবে ব্যতিক্রম নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার দুন্দিবাড়ি সাইটের পাড় এলাকায়। কোনো বিশেষায়িত ছাড়াই সেখানে গরুর খাঁটি দুধের সর দিয়ে বানানো ‘মালাই চা’ পান করতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত মানুষ।

দুন্দিবাড়ি সাইটের পাড় এলাকায় দুটি চায়ের দোকান রয়েছে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। একটি দোকানে দিনে ১২-১৫ হাজার, অপরটিতে ৯-১২ হাজার টাকার চা বিক্রি হয়। সে হিসাবে মাসে ছয় লাখ টাকার বেশি চা বিক্রি হচ্ছে দোকান দুটিতে।

আরও পড়ুন: এক দোকানে ৫৩ রকমের চা

জলঢাকা উপজেলা শহর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে সাইটের পাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তিস্তা সেচ প্রকল্পের পানি নিয়ন্ত্রণ ব্যারাজের পাশে গড়ে উঠেছে দুটি দোকান। যেখানে গ্রাম থেকে সংগ্রহ করা দুধ জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয় সর। সেই সর দিয়েই বানানো হয় চা। দাম মাত্র ১০ টাকা। স্থানীয়রা একে ‘মালাই চা’ বলেন। অপেক্ষাকৃত দাম কম হওয়ায় দোকান দুটিতে ভিড় হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগে এখানকার চায়ের তেমন কোনো নাম না থাকলেও ছয় মাস আগে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে সরের তৈরি মালাই চা। রমজানের আগে থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এলাকাভিত্তিক কয়েকটি গ্রুপে প্রথম প্রচার হয় এ চায়ের কথা। পরবর্তীসময়ে ঈদুল ফিতরে বাড়তে থাকে মালাই চায়ের জনপ্রিয়তা।

আরও পড়ুন: দুধ চা শরীরের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর?

জলঢাকার মালাই চায়ের ভক্ত মো. রনির। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জ উপজেলায়। রনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি আত্মীয়ের বাসায় এসে প্রথম এখানকার চা পান করি। তখন থেকে এ চায়ের প্রেমে পড়ে যাই। যখনই মন টানে ২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে চলে আসি এখানে। বলতে পারেন প্রতি সপ্তাহে আমি এখানকার চা পান করি। সবমিলিয়ে ফ্যান্টাসটিক একটা চা।’

পরিবারসহ চা পান করতে আসা ক্রিস্টি আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ চায়ের কথা অনেক শুনেছি। পরে পান করে দেখলাম। অত্যন্ত ভালো একটা চা।’

বন্ধুদের নিয়ে চা পান করতে আসা আবু সাঈদ শাকিল মোল্লা জাগো নিউজকে বলেন, ‘আসলে এই চা-টা অনেক ভালো। আগে একটা দোকান ছিল। এখন আরও একটি দোকান গড়ে উঠেছে। আমরা প্রতি সপ্তাহে এখানে আসি।’

আরও পড়ুন: সবচেয়ে জনপ্রিয় ৫ রকমের চা

কথা হয় চা বিক্রেতা মো. সাজুর সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি আগে সচিবালয়ের সামনে চা বিক্রি করতাম। সেখান থেকে নিজ এলাকায় এসে চা বিক্রি শুরু করি। আগে তেমন জনপ্রিয়তা না থাকলেও বর্তমানে সবাই আমার চায়ের ভক্ত হয়ে গেছেন। রাত ১২টার পরও ক্রেতা থাকে। চায়ের চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে আমরা হিমশিম খাই।’

প্রতিদিন ১২-১৫ হাজার টাকার চা বিক্রি হয় বলে জানান এ চা বিক্রেতা।

অন্য চায়ের দোকানের মালিক তরিকুল ইসলাম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখানে অনেক জায়গার মানুষ চা পান করতে আসেন। আমরা গরুর খাঁটি দুধ দিয়ে চা বানাই। অনেক দূর-দূরান্তের লোকজন আসে।’

তিনি আরও বলেন, প্রশাসনিক চাপ আর নিরাপত্তার জন্য রাত ১২টার পর দোকান খোলা রাখা যায় না। তবুও বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ৯-১২ হাজার টাকার চা বিক্রি হয়।

রাজু আহম্মেদ/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।