৭৯ বছর ধরে ভোজন রসিকদের বাসনা মেটাচ্ছে হোটেল গোওসিয়া

তানভীর হাসান তানু তানভীর হাসান তানু ঠাকুরগাঁও
প্রকাশিত: ০৮:২০ পিএম, ১৫ জুলাই ২০২৩

দেশের উত্তরের জনপদ ঠাকুরগাঁও। সীমান্তবর্তী এ জেলার ভোজন রসিক মানুষের জন্য ১৯৪৪ সালে হোটেল গোওসিয়া প্রতিষ্ঠা করেন বারেকআল্লাহ্ নামের এক ব্যক্তি। খাবারের গুণগত মান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং ক্রেতাদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণের জন্য শুরু থেকে এখন পর্যন্ত হোটেল গোওসিয়া জেলার ভোজন রসিক মানুষদের জন্য এক আস্থা ও বিশ্বাসের নাম।

ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তায় অবস্থিত হোটেল গোওসিয়া। হোটেলটির প্রতিষ্ঠাতা বারেকআল্লাহ্ মারা যাওয়ার পর হোটেল পরিচালনার দায়িত্ব নেন তার ছেলে ওয়াসিম খান।

এই হোটেলের খাবারের মধ্যে কাচ্চি, গ্লাসি, মোরগ পোলাও, চিকেন টিক্কা, লাবাং, কাশ্মীরী নান ও বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি অন্যতম।

ঠাকুরগাঁওয়ের প্রবীণ ব্যক্তি আসলাম খান বলেন, যখন হোটেল গোওসিয়া যাত্রা করে তখন অনুন্নত এ জেলায় কোনো বড় হোটেল ছিল না। কোনো উদ্যোক্তা সাহস করে বড় পরিসরে এ হোটেল ব্যবসায় নামেনি। এই শহরে খাবার হোটেলে আধুনিকতার ছোঁয়া এনেছে হোটেল গোওসিয়া।

৭৯ বছর ধরে ভোজন রসিকদের বাসনা মেটাচ্ছে হোটেল গোওসিয়া

সীমান্তবর্তী উপজেলা হরিপুর থেকে আসা বয়োজ্যেষ্ঠ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, জেলার আনাচে কানাচে হোটেল গোওসিয়ার সুনাম রয়েছে। ঠাকুরগাঁও শহরের হোটেল বলতে এখনো আমরা সীমান্তবর্তীর মানুষ হোটেল গোওসিয়াকে বুঝি। আমি শুরু থেকে হোটেলের অতিথি। আমি এখানকার খাবারের মান ও কর্মচারীদের ব্যবহারে সন্তুষ্ট।

তরুণ, যুবক ও কিশোরদের পছন্দের বিরিয়ানি, কাবাবসহ আধুনিক খাবারের আস্থার নামও হোটেল গোওসিয়া।

৭৯ বছর ধরে ভোজন রসিকদের বাসনা মেটাচ্ছে হোটেল গোওসিয়া

ঠাকুরগাঁও বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র মোহাম্মদ আবিরের পছন্দের খাবার বিরিয়ানি। সে জানায়, শহরে অনেক হোটেল রয়েছে, তবে গোওসিয়া নামে ও মানে সেরা।

এই হোটেলে ৩০ বছর ধরে খাবার পরিবেশনের কাজ করেন ইউসুফ আলী। তিনি বলেন, এটিই আমার প্রথম কাজের জায়গা। মালিকপক্ষের ভালো আচরণ ও সহযোগিতাপন্ন মনোভাব আমাদের এখানে কাজ করতে আরও উদ্যোমী করে তোলে। হোটেলের ৪০ বছরের পুরোনো এক কর্মচারী কিছুদিন আগে মারা গেছেন। আমরা দেখেছি তার পরিবারের পাশে কীভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে মালিক পক্ষ।

৭৯ বছর ধরে ভোজন রসিকদের বাসনা মেটাচ্ছে হোটেল গোওসিয়া

হোটেলের পরিচালক ওয়াসিম খান বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পর হোটেল গোওসিয়ার নামডাক ধরে রাখা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। লেখাপড়া শেষ করে চাকরি করবো নাকি হোটেলে বসবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। সমাজের অনেক কটুক থাও শুনতে হয়েছে হোটেলে বসে। শেষে আমি এ কাজটাকেই পেশা হিসেবে নিয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ হোটেল গোওসিয়া এখনো ভোজন রসিক মানুষদের মুখে মুখে। চেষ্টা থাকবে আরও রুচিশীল পরিবেশনার।

তিনি আরও বলেন, শুধু ভোজন রসিক মানুষ নয়, শহরের সরকারি বেসরকারি সব দপ্তরে হোটেল গোওসিয়া একটি সমাদৃত নাম। আমরা সব দপ্তরকে খাবার দিই। কোনোদিন খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ আসেনি।

এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।