‘বান আইলে হামারগুলোর কষ্টের শ্যাষ থাকে না’

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০৮:০১ পিএম, ১৪ জুলাই ২০২৩

‘গত রাত থেকে হঠাৎ পানি বাড়ছে, বিছানা তোষক তলে গেইছে। রান্নার হাঁড়ি-পাতিল পানিত ভাসি গেইছে। কয়টা হাঁস ছিল নদীতে ভাসি কোনো দিকে গেইছে কবার পাং না। ছাওয়া পাওয়া নিয়ে সকাল থাকি ব্রিজের মধ্যে তিরপল টাঙি আছি। সমানে ঝড়ি হবাইছে। বান আইলে হামারগুলোর কষ্টের শ্যাষ থাকে না।’

কথাগুলো বলেছিলেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙা ইউনিয়নের পাটেশ্বরী বাজার এলাকার মোছা. আমেনা বেগম। শুধু আমেনা বেগমের পরিবারই নয়, পানিতে ঘর বাড়ি তলিয়ে এমন দুর্ভোগে পড়েছে জেলার শতাধিক পরিবার।

সরেজমিনে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙা ইউনিয়ন, যাত্রাপুর, নাগেশ্বরী উপজেলার বানডাঙাসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এরইমধ্যে আশ্রয়ের জন্য ছুটছেন তারা। কেউ স্বজনদের বাসা, কেউ রাস্তার ধারে আশ্রয় নিচ্ছেন।

আমেনা বেগম জানান, নিজের জমি-জমা নদীভাঙনে বিলীন হয়েছে। দু-তিনবার নদীভাঙনের পর এখন যেখানে আশ্রয় নিয়েছেন নিচু জায়গায়। অল্প পানি হলেই ঘরের ভেতরে পানি ওঠে। কিছুদিন আগে পানি উঠে সঙ্গে সঙ্গে নেমে গেছে। এবার পানি বাড়ার ধরন আলাদা। ঘর অর্ধেক পানিতে ডুবে গেছে। ঘরের জিনিসপত্র নিয়ে এই ব্রিজে আশ্রয় নিয়েছেন।

ওই এলাকার বাসিন্দা নাসিম বলেন, হু হু করে পানি বাড়ছে। একদিকে বন্যা অন্যদিকে বৃষ্টি হওয়ায় আমাদের খুবই দুর্ভোগে দিন কাটছে। ঘরে চাল ডাল আছে কিন্তু রান্না করার চুলার ব্যবস্থা নেই। এই মুহূর্তে আমাদের শুকনো খাবারের দরকার।

ভোগডাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান বলেন, আমরা নদীভাঙন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। উপজেলা প্রশাসন থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকার অনুমতি পেলে আমেনা বেগমকে সহযোগিতা করা হবে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল আরীফ জানান, বন্যা মোকাবিলার সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৭০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, ৬৫০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১০ লাখ টাকা বিভিন্ন উপজেলাগুলোতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে রাজারহাট উপজেলায় ৬৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া গবাদিপশুর খাদ্য সংকটে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নেওয়ার কথা জানান তিনি।

ফজলুল করিম ফারাজী/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।