সপ্তাহে ৬ দিনই বন্ধ থাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র

জনবল সংকটে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে মিলছে না সেবা। সপ্তাহে ছয়দিনই থাকে বন্ধ। এতে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ইউনিয়নের চার গ্রামের দরিদ্র রোগীরা।
উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে সাদেকপুর, গজারিয়া, আগানগর ও কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং শিমুলকান্দি ও শিবপুর ইউনিয়নে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে।
পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অধীনে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে একজন উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার, একজন ভিজিটর, একজন আয়া এবং একজন পিয়ন কাম নৈশপ্রহরী থাকার কথা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে কোনো জনবল নেই। অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা একজন ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকর্মী সপ্তাহে একদিন স্বাস্থ্যসেবা দেন। বাকি ছয়দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তালাবদ্ধ থাকে।
সরেজমিন দেখা যায়, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির মূল ফটকে ঝুলছে তালা। বন্ধ থাকায় রোগীরাও আসেননি।
আরও পড়ুন: কমিউনিটি ক্লিনিকে মিলছে ২৭ ওষুধ, দিনে সেবা নেন ২৬ রোগী
কথা হয় সাদেকপুর গ্রামের বাসিন্দা সুরজিৎ চন্দ্র দাসের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা ছোটবেলায় দেখতাম ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত চিকিৎসক বসেন। কিন্তু কয়েক বছর ধরে দেখছি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনো চিকিৎসক নেই। এমনকি কে কখন আসছে কেউ জানে না।’
স্থানীয় বাসিন্দা জাকির হোসেন ভূইঁয়া বলেন, ‘সাদেকপুর ভৈরবের একটি ঐতিহ্যবাহী ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। ১২-১৫ বছর আগেও এখানে একজন চিকিৎসক ও একজন ডিজিটর থাকতেন। এখন জনবল না থাকায় সন্ধ্যার পর মাদকসেবী ও বখাটের আড্ডাখানায় পরিণত হয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রাঙ্গণ।’
হৃদয় মিয়া নামের আরেকজন জাগো নিউজকে বলেন, ‘সবসময় দেখি স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বন্ধ। এটি বন্ধ থাকায় টাকা খরচ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে গিয়ে সেবা নিতে হয়।’
স্থানীয় ইউপি মেম্বার তাইবুদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘সরকার যদি হাসপাতালটিতে (স্বাস্থ্যকেন্দ্র) একজন ডাক্তার দিতো তাহলে পুনরায় চালু হতো। রোগীদের দূরে গিয়ে সেবা নিতে হতো না।’
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পদে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ডা. সাইদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘একজন প্যারামেডিক্যাল চিকিৎসক ও একজন ভিজিটরের পদ শূন্য থাকায় সাদেকপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে ইউনিয়ন পর্যায়ের একজন স্বাস্থ্যকর্মী সপ্তাহে দুদিন রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন। স্বাস্থ্যকন্দ্রটিতে পদ পূরণের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ জাগো নিউজকে বলেন, চিকিৎসক ও জনবল সংকটের বিষয়টি সরকারকে জানানো হয়েছে। যদি সরকার চিকিৎসক নিয়োগ দেয় তাহলে দ্রুতই ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়োগ দেওয়া হবে।
রাজীবুল হাসান/এসআর/জিকেএস