জামালপুরে বন্ধ জুটমিলের মালামাল দিনেদুপুরে পাচার
২০১৮ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে জামালপুরের বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্স লিমিটেড। আর এই সুযোগে দীর্ঘদিন ধরে মিলের মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত কয়েকদিন ধরে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে পুলিশের উপস্থিতিতে এই মালামাল সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ প্রশাসন।
স্থানীয়রা জানান, বকশীগঞ্জ পৌর শহরের চরকাউনিয়া দড়িপাড়ায় মিলটি অবস্থিত। ২০১৮ সালে মিলের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক বাবুল চিশতি ও এমডি রাশেদুল হক চিশতি দুদকের মামলায় গ্রেফতার হন। পরে মিলটি সিলগালা করে দেয় সরকার। এরপর থেকে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে মিলটি বন্ধ রয়েছে। আর এই সুযোগে দিনেদুপুরে, কখনো রাতের আঁধারে নানাভাবে মিলের মূল্যবান যন্ত্রাংশ পাচার করছে একটি প্রভাবশালী চক্র।
তারা আরও জানান, সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (৪ জুলাই) দুপুরে বকশীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফিরোজের উপস্থিতিতে দুটি ট্রাকে জেনারেটরসহ মিলের মূল্যবান যন্ত্রাংশ সরিয়ে নেওয়া হয়। এর আগেও রাতের আঁধারে এক প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির নির্দেশে আটটি ট্রাক ভর্তি করে জুট মিলের যন্ত্রাংশ সরানো হয়। তবে এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ মালামাল পাচার করা হয়েছে তার সঠিক হিসাব কেউ দিতে পারেননি। আর ট্রাকগুলো কোথায়, কীভাবে যাচ্ছে সেটাও কেউ বলতে পারেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন এলাকাবাসী দাবি করেন, মিলের সিংহভাগ যন্ত্রাংশই পাচার হয়ে গেছে। তবে এসব মালামাল কোথায় যাচ্ছে জানতে চাইলে তাদের হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়। পুলিশ দিয়ে হয়রানি ও মামলার ভয় দেখান পাচারকারীরা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বকশীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক ফিরোজ জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। কয়েকদিন আগে ওইখানে গিয়েছিলাম। এরপর ৯৯৯ এ ফোন আসলে চলে আসি। পরে কী হয়েছে তা বলতে পারছি না।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল রানা বলেন, মিলের মালামাল রক্ষণাবেক্ষণে দুদক থেকে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমরা কাজ করছি।
পুলিশের উপস্থিতিতে মালামাল পাচার প্রসঙ্গে ওসি বলেন, ওইদিন ঘটনাস্থলে এসআই ফিরোজ থাকলেও ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে তিনি অন্যত্র চলে যাওয়ায় কী হয়েছে তা তিনি বলতে পারবেন না।
বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুৎফুন নাহার জানান, বিষয়টি তিনিও জেনেছেন। তবে পাচার হয়েছে কি না তা তিনি বলতে পারবেন না। যারা ট্রাকে করে জুট মিলের মালামাল নিয়েছেন তারা বলেছেন পুরাতন যন্ত্রাংশ মেরামত করার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মো. নাসিম উদ্দিন/এমআরআর/জেআইএম