বৈঠারপাড় সেতুটি এখন মরণফাঁদ
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার ভোলভোলা খালের বৈঠারপাড় সেতুটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সেতুটির মাঝে ভেঙে যাওয়ার কারণে ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে ছয় গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ।
জানা যায়, ১৯৮৩-৮৪ সালে ভোলভোলা খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। বছরখানেক আগে সেতুর মাঝখানের একটি অংশ ভেঙে যায়। এতে করে স্কুল-মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসীরা। এছাড়া রাতের বেলায় সেতুটি পার হতে গিয়ে গর্তে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে। দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও সেতুটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সেতুটির মধ্যভাগের লোহার অ্যাঙ্গেল ও সিমেন্টের স্লাব ভেঙে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন স্থানীয়রা সেতুর মধ্যভাগের ভাঙা অংশে কাঠের তক্তা দিয়ে চলাচল করেন। নড়বড়ে এ সেতু দিয়ে প্রতিদিনই শত শত যানবাহন ও সাধারণ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। কিন্তু এ সেতুটি দিয়ে ভারী কোনো মালামাল নিয়ে গাড়ি আনা-নেওয়া করতে পারেন না।
এমনকি বাজারের পাশেই রয়েছে একটি মাদরাসা ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এ সেতু দিয়েই চন্দ্রদ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আমুভূঞার হাট মাদরাসার শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে এতে। কোনো দুর্ঘটনার আগেই সেতুটি মেরামতের দাবি জানান এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন: ভাগনের রডের আঘাতে প্রাণ গেলো মামার
স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইয়াকুব বলেন, অটোরিকশা, রিকশা, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন প্রতিনিয়তই সেতুটি দিয়ে চলাচল করতো। এতে করে দিন দিন সেতুটি আরও নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। বর্তমানে সাধারণ রিকশা ও অটোরিকশা ছাড়া অন্য কোনো ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারে না। বিশেষ করে চালের বস্তা নিয়ে বাড়ি যেতে খুবই ভয় হয়। কয়েকদিন আগে রিকশা নিয়ে সেতু পারাপারের সময় পড়ে গিয়ে কয়েকজন আহত হয়েছেন। এছাড়া এলাকার বেশির ভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তাদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে এই সেতু দিয়ে বাজারে যেতে হয়।
চন্দ্রদ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. শফিউল ইসলাম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সেতু পার হয়ে স্কুলে আসা যাওয়া করতে ভয় লাগে।
এ বিষয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মতিউর রহমান বলেন, সেতুর মাঝখানের অংশ ভেঙ্গে পড়ে আছে। মানুষের যাতায়াতে কষ্ট হচ্ছে। স্কুল-মাদরাসার ছোট ছোট শিশুদের জন্য বেশি ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই সেতুটি দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন।
পূর্ব চন্দ্রপুর ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মফিজুর রহমান বলেন, এরই মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন।
আরও পড়ুন: চেয়ারম্যান বাবুর সহযোগী নয়ন গ্রেফতার
পূর্ব চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ রায়হান বলেন, উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা ভাঙা অংশটুকু সংস্কার করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। ছয় মাস আগে চাহিদাপত্র নিয়ে গেছেন। কিন্তু এখনো সংস্কার হয়নি।
দাগনভূঞা উপজেলা প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ বলেন, পরিদর্শন করেছি। সেতুটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সেতুটি পুনর্নির্মাণের জন্য চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলে সেতুর কাজ শুরু করা যাবে।
আবদুল্লাহ আল-মামুন/জেএস/জিকেএস