বিপৎসীমায় ওঠানামা করছে তিস্তার পানি, বন্যার আশঙ্কা
পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তার পানি ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে-নিচে ওঠানামা করছে। এতে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চরের বাসিন্দারা। ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (৩ জুলাই) সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল ৬টার দিকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, সকালে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে তিস্তার পানি আবারও কমতে শুরু করেছে।
তিস্তায় পানি বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় কিছুটা ভোগান্তিতে পড়ছে তিস্তাপাড়ের মানুষ।
আরও পড়ুন: বাড়ছে তিস্তার পানি, খুলে দেওয়া হয়েছে সব জলকপাট
১৭ দিন আগে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহের ফলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে ৩০০ মেট্রিক টন চাল ও চার লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে।
চর সিন্দুর্নার সাবেক ইউপি সদস্য মফিজার রহমান বলেন, তিস্তা নদীতে পানি ভরপুর রয়েছে। দিনের বেলা কমলেও রাতে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে পানি বাড়লে চর এলাকার মানুষের ঘরবাড়িতে পানি উঠবে।
গড্ডিমারী ইউনিয়নের দোয়ানি গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আয়নাল হক বলেন, ঈদের দিন থেকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর আবারও বাড়ছে আর কমছে। এতে রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। মানুষের চলাচলের কষ্টকর হয়ে পড়ছে।
হাতীবান্ধার গড্ডিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলে গড্ডিমারীর পাঁচটি ওয়ার্ডে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়। ১০-১৫ দিন পূর্বে তিস্তার পানির ঘরবাড়িতে প্রবেশ করে। এতে প্রায় ৬ মেট্রিক টন চাল প্রথম দফায় পানিবন্দি মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। তিস্তাপাড়ের লোকজনের সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বাড়তে পারে। ফলে তিস্তার তীরবর্তী নিম্ন অঞ্চলের মানুষজনের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করতে পারে।
রবিউল হাসান/আরএইচ/জেআইএম